শিরোনাম
ঢাকা, ৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): চীনের ইউনান প্রদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগীদের মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংযুক্ত হাসপাতাল (ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটাল অব কুনমিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটি) পরিদর্শন করেন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের একটি প্রতিনিধি দল।
সেসময় ইউনান প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সরকারি হাসপাতালের প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারা। সভায় বাংলাদেশি নাগরিকদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ইউনান প্রদেশ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার পাঠানো এক বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউনানের স্বাস্থ্য কমিশনের উপ-পরিচালক ওয়াং জিয়ানকুন বলেন, আমাদের এখানে চিকিৎসা নিতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের সহায়তায় সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা আরো জোরদারে আমাদের সরকার ও ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস নিয়মিত বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৩ সদস্যের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানায় চীন সরকার। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
দুই ঘণ্টার মতবিনিময় সভায় চীনের পক্ষে অংশ নেন কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সংযুক্ত হাসপাতালের সভাপতি জেং ঝিং, মেডিকেল প্রশাসন বিভাগের উপপরিচালক জিয়ে হংবিন এবং আন্তর্জাতিক মেডিকেল বিভাগের পরিচালক হান রুই।
এ সময় বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাদের কাছে তুলে ধরেন। যেমন ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনদের আবাসন, যাতায়াত খরচ, বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা, লিয়াজোঁ অফিসের প্রয়োজনীয়তা, ফলো-আপ চিকিৎসা ও বিল পরিশোধ পদ্ধতি এবং রোগীর মৃত্যু হলে মরদেহ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উচ্চ ব্যয় ইত্যাদি।
জবাবে ওয়াং জিয়ানকুন বলেন, বাংলাদেশি রোগীরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হন, সেসব বিষয় সম্পর্কে অবগত আছি। এসব সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি।
এসময় আরো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চীনের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ দিতে চীনা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান আবুল কালাম আজাদ। তিনি আরো বলেন, এতে ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে ভবিষ্যতে রোগীদের সহায়তা করতে পারবে ওই শিক্ষার্থীরা।
উপ প্রেসসচিব বলেন, চীনা কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা বাড়লে ভবিষ্যতে আরো বেশি বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসার জন্য চীনমুখী হবেন বলে আমরা আশা করি।
কুনমিং হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত ছয় মাসে লিভার সিরোসিস ও স্তন ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে ৬৭ জন বাংলাদেশি রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পরে স্থানীয় ফরেন অ্যাফেয়ার্স অফিস বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করে। সেখানেও চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি রোগীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
শুক্রবার কুনমিংয়ের আরো কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শনের কথা রয়েছে বাংলাদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলের।