বাসস
  ১৪ জুলাই ২০২৫, ২০:৪৬

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু: বিএনপি মহাসচিব

আজ বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : বিএনপি মিডিয়া সেল

ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০২৫ ( বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘এ দেশের গণতন্ত্র রক্ষার ভ্যানগার্ড তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা দেশের মানুষ আর গণতন্ত্রের শত্রু। তাদের ষড়যন্ত্র ও অতীত ইতিহাস আমরা জানি। এর চেয়ে বেশী কিছু বলতে চাইনা।’ 

আজ বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং মিটফোর্ড এলাকায়  প্রকাশ্যে লালচাঁদ সোহাগকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মিটফোর্ড এলাকায় বুধবারে প্রকাশ্যে লালচাঁদ সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনার বিএনপি নিন্দা জানিয়ে খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, এই খুনের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খু ভাবে তদন্ত হতে হবে। যারা দায়ী তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এটা (নির্মম হত্যাকাণ্ড) যারা করেছে তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য করেছে।’

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এ সমাবেশে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুব দলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দলের হাজার-হাজার নেতা-কর্মী ফকিরেরপুল থেকে শুরু করে নয়াপল্টন, কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁর মোড় পর্যন্ত মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। মহাসচিবের বক্তব্যের পর  মিছিলটি বিজয় নগর হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা আজকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু।  যারা দেশের বিরুদ্ধে বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু, তারা এই দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে। আসুন, আজকে এই শান্তিপূর্ণ র‌্যালির মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিই, গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের কোনো আপস নাই। আমি ধিক্কার জানাচ্ছি ওই সব তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদেরকে যারা তারেক রহমান সম্পর্কে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বলেছেন।'
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেছেন। এটি গণতন্ত্রের জন্য সুন্দর ভাষা হতে পারে না। আপনারা বলেছেন, কিন্তু আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায়  কথা বলব না। যাকে এ দেশের লক্ষ-কোটি মানুষ ভালোবাসে, আমাদের সেই নেতাকে আপনারা অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় কথা বললে তার মান মর্যাদা  ছোট হবে না। তিনি মহৎ গুণে তা ক্ষমা করবেন। এটাই নেতৃত্বের শিক্ষা।  

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ' আমরা আমাদের ইস্পাত কঠিন দৃঢ় ঐক্য নিয়ে টিকে আছি। ১৫ বছর লাঞ্ছিত হয়েছি, নির্যাতিত হয়েছি, নিপীড়িত হয়েছি সেই ঐক্যে কেউ ফাটল ধরাতে পারেনি। এখনো আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। আমি সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাব, আসুন গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।'

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য মির্জা ফখরুল বলেন,‘ আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে, আমরা যেন কারো পাতানো ফাঁদে পা না  দেই। তারা চেষ্টা করছে আমাদেরকে উত্তেজিত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেয়ার জন্য। যাতে আমরা উত্তেজিত হয়ে যাই।'

তিনি বলেন,  ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য এখন একটাই-দেশে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। লন্ডন বৈঠকে তারেক রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টা আলাপ করে ঠিক করেছেন। সেটির বাস্তবায়ন করা। আশা করি এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঠিক হওয়ার পর থেকে ওদের মাথা বিগড়ে গেছে। যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমান সাহেব নিশ্চিত করে ফেলেছেন যে, এবার নির্বাচন হবে, তখন থেকেই তাদের মাথা বিগড়ে গেছে।'

মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাই, আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা জনগণের খাওয়া-পড়ার ব্যবস্থা করতে চাই, চাকুরির সংস্থান করতে চাই, নতুন এক বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে চাই।  অপরদিকে ‘ওদের পরিকল্পনাটা হচ্ছে অত্যন্ত ভয়াবহ । তারা বাংলাদেশে আবার একটা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চান। অস্থিরতা ও বিভাজনের রাজনীতি চায়। 

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল, এই দলকে দেশের জনগণ ভালোবাসে। যত ষড়যন্ত্রই করেন না কেন এই দলকে সহজে জনগণের মন থেকে উঠিয়ে ফেলা যাবে না 

তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যখন হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ওপরে হামলা করা হয়েছিল তখন অনেকের খোঁজ ছিল না। বিএনপি হেফাজতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।  আর একটি দলের লম্বা লম্বা কথা বলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। যাদের নিজের পায়ে জোর নাই, তারা এখন গায়ের জোরে কথা বলেন।