শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
এছাড়া, আনুষ্ঠানিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩০ জনের মধ্যে অন্য মামলায় গ্রেফতারকৃত চারজনকে এই মামলায় আজ গ্রেফতার দেখিয়ে আগামী ১০ জুলাই ট্র্যাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে একই তারিখে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আজ সকালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দেয়ার পর তা ট্র্যাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এরপর, বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-২ আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি আমলে নিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১০ জুলাই দিন ধার্য করেন।
আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন। এসময় অন্য প্রসিকিউটররা ট্র্যাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'তদন্ত সংস্থা আবু সাঈদ হত্যার যে তদন্ত আমাদের কাছে জমা দিয়েছে সেখানে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ট্র্যাইব্যুনাল-২ তে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।'
এই মামলার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিলেন ট্র্যাইব্যুনাল-১।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদ পুলিশের ছুড়া গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।