শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ জুন, ২০২৫ (বাসস): বণ্যপ্রাণী দ্বারা আক্রান্ত ৪৯৪ জন ভুক্তভোগীকে ২ কোটির বেশি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জানমালের ক্ষতিপূরণ বিধিমালা-২০২১ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের এ সহায়তা দেওয়া হয়। গণসচেতনতা বৃদ্ধি ও জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণের টেকসই সমাধানের চেষ্টা চলছে। চট্টগ্রামে মানুষ-হাতি দন্ধ¦ নিরসনে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পোষা হাতি ব্যবহার করে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযানও পরিচালিত হচ্ছে।
সেন্টমার্টিন নিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘সেন্টমার্টিন নিয়ে আপনারা অনেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন করে জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরে আসা শুরু হয়েছে। এখন আমরা পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছি। যে নিয়ন্ত্রণমূলক কাজটা করছি এর পাশাপাশি সেন্টমার্টিন দ্বীপটাকে নিয়ে একটা মাস্টারপ্লান করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। কিছু কিছু মাস্টারপ্ল্যান ব্যক্তি পর্যায়ে বা প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে কিন্তু সরকারি পর্যায়ে তা নেই। তবে সরকারি পর্যায়ে সেন্টমার্টিন নিয়ে নীতিমালা তৈরি করা আছে। যেগুলো গেজেটভুক্ত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই তিনটার সমন্বয়ে আমরা একটা মাস্টারপ্ল্যান করতে পারি কি না সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে এটার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে একটা প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে, যেটার মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে সেন্টমার্টিনের স্থানীয় মানুষগুলোর জন্যে। তারা প্রথাগতভাবে যেই জীবিকার সঙ্গে জড়িত সেই জীবিকাগুলোকে একটু সার্পোট দিয়ে এগিয়ে নেওয়া যায় কি না সেজন্য ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দু’জনকে স্থায়ীভাবে পোষ্টিং দিয়ে দিয়েছে।’
রিজওয়ানা বলেন, তাছাড়া সেন্টমার্টিনকে রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্রাক ও কোস্টাল আমাদেরকে এসেসমেন্ট করে জানাচ্ছে ঠিক কী ধরনের লাইভলিহুড সেখানকার মানুষদের জন্য প্রযোজ্য। আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে দিবো।
উপদেষ্টা জানান, পবিত্র ঈদ উপলক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হয়নি। জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রতিবছরের মতো এবারো বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। এবার পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগ এবং সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার ও বিপণন বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর আটটি এলাকা ও ১২ টি জেলার ৪০ টি উপজেলা এক্সপোজড কোষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করে তিন বছরের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যার আওতায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা হয়েছে এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ‘এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেস্পন্সিবিলিটি’র (ইপিআর) খসড়া তৈরি হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, ১৭টি পণ্যকে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং ১ জুন থেকে স্ট্র, স্টারার ও কটন বাডের উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চেইন শপিং স্টোরে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ হয়েছে এবং অন্যান্য মার্কেট ও শপিংমলে তা বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তবে কাঁচা বাজারগুলোতে মূলত নিজেদের অভ্যাসের একটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পলিথিন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় তাদের উৎপাদিত পণ্যের তালিকায় শপিং ব্যাগ উৎপাদন নিশ্চিত করেছে। এ মন্ত্রণালয় পাটের ব্যাগ উৎপাদন করবে এবং ক্রেতারা সুলভ মূল্যে পাটের ব্যাগ কিনতে পারবেন বলেও উল্লেখ করেন পরিবেশ উপদেষ্টা।