শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ মে, ২০২৫ (বাসস): সোমবার গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৩ জন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে হামলায় নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা সোমবার একথা জানিয়েছেন।
গাজা শহর থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, গাজা শহরের স্কুলে হতাহতের বেশিরভাগই শিশু। অন্যদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ‘স্কুলটি হামাসের আবাসস্থল ছিল।’
ইসরাইলি সেনাবাহিনী প্রায় তিন মাস ধরে গাজা শহরে সহায়তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানে তীব্র খাদ্য ও চিকিৎসা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়েছে ইসরাইল। এরপরও ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামাসকে ধ্বংস করতে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
রোববার ইউরোপীয় ও আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্ব নেতারা ‘অমানবিক’ ও ‘অর্থহীন’ যুদ্ধের অবসানের আহ্বান জানান। অপরদিকে সহায়তাকারী গোষ্ঠীগুলো বলেছে, যে সাহায্য আছে, তা ক্ষুধা ও স্বাস্থ্য সংকট নিরসনের জন্য যথেষ্ট নয়।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন,ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে ভোরে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৩৩ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছেন। এদের বেশিরভাগই শিশু। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারীও রয়েছেন।
তিনি আরো বলেছেন, সোমবার ভোরে উত্তর গাজার জাবালিয়া শহরে আব্দ রাব্বো পরিবারের একটি বাড়িতে বিমান হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাস ও ইসলামিক জিহাদের কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে কর্মরত স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। যারা পূর্বে ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুল নামে পরিচিত একটি এলাকায় অবস্থান করেছিল।
বেসামরিক লোকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
হামাসকে ধ্বংস করতে ইসরাইল গাজায় তাদের হামলা আরো বাড়িয়েছে। তারা হাজারো রিজার্ভ সৈন্যকে ব্যবহার করেছে।
সোমবার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকা জুড়ে ২শ’টিরও বেশি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসীদের অবস্থান, অস্ত্র সংরক্ষণের স্থান, স্নাইপার ও ট্যাঙ্ক-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র পোস্ট, টানেল শ্যাফ্ট এবং হামাস যোদ্ধাদের অবকাঠামো ।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে গাজায় অন্তত ৩ হাজার ৭৮৫ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনে মোট নিহতের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৯৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
ইসরাইলি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপি’র হিসেব অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলে হামাসের হামলায় ১২১৮ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে। তাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছেন। অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর এখনো ৫৭ জন গাজায় রয়ে গেছে।