বাসস
  ০১ আগস্ট ২০২৫, ০০:২৪
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩০

১৯ বিষয়ে ঐকমত্য এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের আলোচনা শেষে প্রেস ব্রিফিং করেন আলী রীয়াজ। ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ৩১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকে ১৯টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে৷ এ সকল বিষয়ের মধ্যে কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ  ঐকমত্য এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ সব বিষয় জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল, সংসদের নারী প্রতিনিধিত্ব, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ বিশেষত উচ্চকক্ষ এর গঠন সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি ও এখতিয়ার, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, ইলেক্টোরাল কলেজ ইত্যাদি , রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ সম্পর্কিত তথ্য এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি- এই ১৯ টি বিষয়ে ব্যাপারে আমরা ঐকমত্য গড়ে সিদ্ধান্ত উপনীত হতে পেরেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নোট অফ ডিসেন্ট আছে।

তিনি বলেন, যে সকল বিষয়ে ঐকমত্য বা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা জুলাই জাতীয় সনদে পরিণত করতে হবে।

তিনি জানান, নোট অব ডিসেন্টসহ যে-সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা হল, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, নারী প্রতিনিধিত্ব, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ ও সুপ্রিম কোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকা, সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সংবিধানে সংযোজন করা, উচ্চকক্ষ গঠন, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে উত্থাপিত সমন্বিত প্রস্তাবের ৮,৯,১১ এবং ১২ ক্রমিক নম্বরের প্রস্তাবসমূহ, এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, নারী আসন বৃদ্ধির প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি নোট অব ডিসেন্ট এসেছে। তিনি আরো জানান, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিষয়ে আজ বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ-মার্কসবাদী এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি নোট অব ডিসেন্ট প্রদানসহ সভা বর্জন করে।

এছাড়া এই বিষয়ে গণফোরামের প্রতিনিধি এই ইস্যুতে ভিন্নমত প্রদান করলেও সভা বর্জন করেননি।

আলী রীয়াজ জানান, দীর্ঘ ২৩ দিনের আলোচনায় যে-সকল বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

এক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশন অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে এবং এরপর যথাসময়ে কমিশন দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী,  জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজ এ আলোচনায় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত ২ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুভ উদ্বোধন করেন।

৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩০টি দল ও জোটের সাথে মোট ২৩টি সেশনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।