বাসস
  ০৪ জুন ২০২৫, ১৪:০১

সুনামগঞ্জে পশুর হাটগুলো সরগরম

ছবি : বাসস

মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী

সুনামগঞ্জ, ৪  ২জুন ০২৫ (বাসস) :ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে জেলার পশুর হাঠগুলো। এ বছর জেলার ১২টি উপজেলার ও ৪টি পৌরসভায় পশুর হাঠ রয়েছে ৩৩ টি। 

ইতোমধ্যেই হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। তবে, এখনও বেচাকেনা পুরোপুরি জমে উঠেনি। ক্রেতারা হাটে এসে পছন্দের পশু দেখছেন, দাম যাচাই করছেন। ঈদের ২-১ দিন আগে পুরোপুরি বিক্রি জমে উঠবে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২টি উপজেলা ও ৪টি পৌর সভায় মোট পশুর হাঠ রয়েছে ৩৩টি। এর মধ্যে স্থায়ী হাটের সংখ্যা ২৬টি এবং অস্থায়ী পশুর হাট রয়েছে ৭টি।  এ ছাড়াও সুনামগঞ্জ পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠেও বসেছে অস্থায়ী পশুর হাট।

পশুর হাটগুলো মধ্যে জেলা সদর উপজেলায় ৪টি,  শন্তিগঞ্জ উপজেলায় ১টি, ছাতক উপজেলায় ৪টি, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৯টি, জগন্নাথপুর উপজেলায় ৩টি, দিরাই উপজেলায় ২টি, জামালগঞ্জ উপজেলায় ২টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৩টি, তাহিরপুর উপজেলায় ২টি, ধর্মপাশা উপজেলায় ১টি এবং মধ্যনগর উপজেলায় ২টি।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানান, জেলার ১২টি উপজেলায় ঈদকে কেন্দ্র করে স্থায়ী-অস্থায়ী হাটে ইতোমধ্যে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। কেউ কেউ হাট বসাচ্ছেন ঈদের আগের তিন দিন, কেউ দুই দিন, আবার কোথাও কোথাও সপ্তাহব্যাপী পশু কেনা-বেচা হবে। 

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার আমবাড়ি গরুর হাটে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কোরবানিকে সামনে রেখে হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশি গরু-ছাগল আসছে। সকাল থেকে ছোট-বড়-মাঝারি আকারের গরু, কয়েক বছর লালন পালনের পর বিক্রির জন্য হাটে তুলেছেন খামারিরা। আবার অনেকে দেখছেন, যাচাই করছেন দাম।

সদর উপজেলার মাউজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও ছোট খামারি সেবুল মিয়া বাসসকে জানান, তারা ৩ জনের মিলে ঈদ-উল- আজহাকে কেন্দ্রে করে ৭টি গরু লালনপালন করে বড় করেছেন।  তবে গরুগুলো দেশী এবং মাঝারি সাইজের। গত দুইদিনে ৩টি গুরু বিক্রি করেছেন। একটি এক লাখ ১ হাজার টাকায় এবং দুটি ৯৫ হাজার টাকা করে। তিনি আরও জানান, ক্রেতারা এখনও গরু নাকিনে শুধু দাম-দর করছেন। সেবুল মিয়া বাসসকে আরও জানান, তিনি কৃষি কাজ করেন। বাড়তি লাভের আশায় ঈদ-উল- আজহাকে সামনে রেখে গরু পালন করেন। 

জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার  গোপালপুর গ্রামের যুবক সুলেমান আহমদ মান্না বাসসকে জানান, তিনি শখের বসে গরু পালন করেন এবং ঈদ মৌসুমে এগুলো বিক্রি করেন। এবার তিনি ৮টি গরু বিক্রি করেছেন। দাম মোটামুটি গতবছরের মতো।

আমবাড়ি গরুর হাটের ইজাদারা ফরিদ মিয়া বাসসকে জানান, এখনও পুরোদমে গরু বিক্রি হচ্ছেনা। ক্রেতারা শুধু দাম-দর করছে। গতকাল মঙ্গলবার এ হাটে অন্তত  ৫০টির মতো গরু বিক্রি হয়েছে। গতবছর এ সময়ে অন্তত ১০০টি গরু বিক্রি হতো। তিনি আরও জানান, এপর্যন্ত ক্রেতারা  শুরু দাম-দর করছেন। ঈদের ২ থেকে ৩দিন আগে বিক্রি বাড়তে পারে।

জেলা ক্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি মো. দিলোয়ার হোসেন বাসসকে জানান, তিনি কয়েকটি গরুর হাট ঘুরে দেখেছেন। ক্রেতারা এখন পর্যন্ত যাচাই-বাছাই ও দাম-দর করছেন। জেলার সবগুলো গরুর হাট জমতে শুরু করেছে। ঈদের ২ থেকে ৩ দিন আগে বেচা-কেনা শুরু হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বাসসকে জানান, প্রতিটি গরুর হাটের নিকটতম স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া আছে। পশু অসুস্থ হলে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা দেবেন।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম বাসসকে জানান, জেলায় এবছর ৩৮ হাজার গরু কোরবানি যোগ্য রয়েছে। জেলায় চাহিদা রয়েছে ৩১ হাজার গরুর।  তিনি আরও জানান, জেলায় দেশী প্রজাতির গরুর চাহিদা বেশি।