বাসস
  ২৯ মে ২০২৫, ২১:০৮
আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, ২১:৩৪

জোয়ারের পানিতে ডুবেছে লক্ষ্মীপুরের ২০ গ্রাম, তীর রক্ষা বাঁধ হুমকিতে

ছবি : বাসস

লক্ষ্মীপুর, ২৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে  জেলার রামগতি ও কমলনগর উপকূলীয় এলাকার প্রায় ২০টি গ্রাম। পাশাপাশি মাতাব্বর হাট এলাকায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বন্ধ রয়েছে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের ফেরি-লঞ্চসহ ছোট নৌযানগুলো। মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

আজ বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে নদীতে ভাটা পড়লে পানি কিছুটা নামলেও আবার জোয়ার আসলে একই অবস্থা তৈরি হচ্ছে। এতে জেলার কমলনগর উপজেলার কালকিনি, সাহেবের হাট, পাটওয়ারীর হাট, চর ফলকন, চর মার্টিন, চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন এবং রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চর গাজী, চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের  নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। জোয়ারের পানিতে রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি এবং নীচু ঘরের ভিটি তলিয়ে যায়।

এছাড়া কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন এলাকায় রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া ৩ হাজার ১শ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু উত্তাল ঢেউয়ে বেড়িবাঁধের মাতব্বর হাট এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো সময় ভয়াবহ ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বাঁধটি।

স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টি ও মেঘনার জোয়ারের পানি প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগ এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন এলাকাবাসী।  দুই শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। হাঁস-মুরগি এবং গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। গৃহস্থালির রান্নার কাজেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নদীর তীররক্ষা বাঁধের কাজ চলছে। কিন্তু কাজ এখনো শেষ হয়নি। ফলে জোয়ারের পানি বাড়লে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। এতে আমাদের ফসলসহ বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তাই দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার দাবি জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ-জামান বাসসকে বলেন, টানা বৃষ্টি ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির প্রভাবে বাঁধের কাজের কোন সমস্যা হচ্ছেনা। তবে কোথাও বাঁধের কোন ভাঙন বা সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকানো খাবার মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি ২৮৫টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। অপরদিকে টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও মেঘনায় ভাটায় পানি নেমে যায়। তবে বন্যার আশঙ্কা এখনো করা হচ্ছে না। তারপরও প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে।