বাসস
  ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৫

প্রকৃতি ও মানুষের জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠানই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন : পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান । ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫(বাসস): পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রকৃতি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা সাহসী ও দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোই দেশের বেশি প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সরকার একা সমাজের সব প্রান্তে পৌঁছাতে পারে না। এধরনের প্রতিষ্ঠান সরকারের সবচেয়ে শক্তিশালী সহযোগী।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং চ্যানেল আই যৌথভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সংরক্ষণ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান মাঠপর্যায়ে মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়। তাদের সঙ্গে সরকারের সব সংস্থার সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, প্রান্তিক মানুষের জন্য ভাসমান হাসপাতালসহ উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলো কেবল সেবা নয়, দায়িত্ববোধও তৈরি করে।

তিনি জানান, হাওর এলাকায় মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে ভাসমান হাসপাতাল একটি কার্যকর মডেল হতে পারে এবং একক ব্যবহার্য প্লাস্টিকমুক্ত আয়োজনের মাধ্যমে আয়োজকেরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশের মাটিতে পাওয়া সম্মান দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দেয় এবং নতুন প্রজন্মের জন্য পথ দেখায়।

প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি  ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।

অতিথি ছিলেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো: জিয়াউল হক।

এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ আন্দোলনের প্রতিনিধি, গবেষক, সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রকৃতি, পরিবেশ ও প্রান্তিক মানুষের জীবনে দীর্ঘদিনের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খানের হাতে ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন-চ্যানেল আই প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক ২০২৫’ তুলে দেওয়া হয়।

পুরস্কার হিসেবে তাকে এক লাখ টাকার চেক এবং আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার সনদ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে একটি পরিত্যক্ত জ্বালানি তেলবাহী জাহাজকে হাসপাতালে রূপান্তরের মাধ্যমে ফ্রেন্ডশিপের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, নিরাপদ পানি, জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো, নাগরিক অধিকার ও জীবিকাভিত্তিক উন্নয়নে সমন্বিত মডেল হিসেবে বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত।

প্রতিবছর প্রায় ৭৫ লাখের বেশি মানুষ সরাসরি ফ্রেন্ডশিপের কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছেন। উপকূলীয় অঞ্চলে ফ্রেন্ডশিপের ম্যানগ্রোভ বনায়ন প্রকল্পে ৬২ কিলোমিটার নদীতীরজুড়ে শত শত হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জলবায়ু সহনশীল জীবিকা গড়ে তোলা হয়েছে।