শিরোনাম

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দ, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ, প্রার্থীর মৃত্যুবরণ, 'না ভোট' এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ মনির স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্ধারিত সময় অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি বিকেল ৫টার পর প্রার্থিতা চূড়ান্ত হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ-২ এর দফা ৬ এর বিধান অনুসারে বৈধভাবে মনোনীত হয়েছেন এবং যার প্রার্থিতা অনুচ্ছেদ ১৬ এর দফা (১) এর অধীন প্রত্যাহার করা হয়নি বা দফা (২) এর অধীন স্থগিত করা হয়নি তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বলা হয়েছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যেই নির্বাচন সীমাবদ্ধ থাকবে। তাদের অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দ করার ভিত্তিতে মুদ্রণ করা ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।
প্রার্থিতা প্রত্যাহার: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ১৬ অনুচ্ছেদে দলীয় মনোনয়ন ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নিম্নরূপ বিধান রয়েছে:
(১) বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থী তার স্বাক্ষরযুক্ত কোনো লিখিত নোটিশের মাধ্যমে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত তারিখ বা তার পূর্বে নিজে অথবা লিখিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারের নিকট প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারবেন।
(২) যেক্ষেত্রে কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল একটি নির্বাচনী এলাকায় একের অধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা অনুরূপ পদধারী কোনো ব্যক্তি কর্তৃক স্বাক্ষরিত লিখিত পত্রের মাধ্যমে তিনি নিজে বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্ধারিত তারিখ বা তার পূর্বে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করবেন এবং সেক্ষেত্রে উক্ত দলের অন্যান্য প্রার্থী আর প্রার্থী হিসেবে গণ্য হবেন না।
(৩) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য লিখিত নোটিশ দেওয়া হলে বা রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হলে কোন অবস্থাতেই তা প্রত্যাহার বা বাতিল করা যাবে না।
(৪) প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নোটিশ এবং রাজনৈতিক দল কর্তৃক প্রদত্ত চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হলে রিটার্নিং অফিসার যদি সন্তুষ্ট হন যে স্বাক্ষর সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বা দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা অনুরূপ পদধারী কোনো ব্যক্তির সেক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি তার কার্যালয়ের দর্শনীয় স্থানে টাঙ্গিয়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবেন।
(৫) রিটার্নিং অফিসার, প্রত্যাহারের তারিখের অব্যবহিত পরের দিন, নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রকাশ করবেন।
৩। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর কার্যক্রম: প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখের পরের দিন অর্থাৎ ২১ জানুয়ারির পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করে নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে আইন ও বিধি অনুসারে নির্ধারিত ফরম-৫ এ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের তালিকা বাংলা বর্ণক্রমানুসারে সাজিয়ে লিখতে হবে।
নির্বাচনি প্রতীক বরাদ্দ: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২০ অনুসারে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর যদি কোন নির্বাচনী এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা এক বা একাধিক হয় তা হলে রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক নিম্নরূপভাবে প্রতীক বরাদ্দ করার বিধান রয়েছেঃ
(ক) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে উক্ত দলের অনুকূলে সংরক্ষিত প্রতীক বরাদ্দ করা।
(খ) স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অনুকূলে বিধি অনুসারে নির্ধারিত কোন প্রতীক বরাদ্দ করা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দের সময় যতদূর সম্ভব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পছন্দের প্রতি লক্ষ্য রাখা।
রাজনৈতিক দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২০ এর দফা (১) এর উপদফা (ক) অনুসারে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অনুকূলে প্রতীক সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। মনোনয়নপত্রের সাথেই কোন দলের কোন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ থাকবে। একটি রাজনৈতিক দল হতে একাধিক মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্ধারিত সময় অর্থাৎ ২০ জানুয়ারির বিকেল ৫ টার মধ্যে রাজনৈতিক দলসমূহ তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন।
সে অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট দলের সংরক্ষিত প্রতীক উক্ত দলের মনোনীত প্রার্থীকে বরাদ্দ করবেন। তবে প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে প্রার্থী কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত হয়েছেন সে সম্পর্কে দলিলাদি দ্বারা প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হবেন। নির্বাচনী সহায়তা ও সরবরাহ অধিশাখা হতে সরবরাহকৃত হালনাগাদ (সংশোধিত) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকা (পরিশিষ্ট-ক) দেয়া হলো। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর একই দলের একাধিক প্রার্থী থাকলে উক্ত দলের সকল প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জোটগতভাবে মনোনীত প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২০ এর দফা (১) অনুযায়ী সময়সূচির প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার পর তিনদিনের মধ্যে কমিশনে দাখিল করা কোন দরখাস্ত অনুযায়ী দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কর্তৃক জোটগতভাবে মনোনীত প্রার্থীর ক্ষেত্রে তার নিজ দলের জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংরক্ষিত প্রতীক বরাদ্দ করতে হবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক: রাজনৈতিক দলের অনুকুলে প্রতীক সংরক্ষণের পর নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৯ এ উল্লিখিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত প্রতীক হতে যতদূর সম্ভব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পছন্দকে বিবেচনায় রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থীগণের অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দ করতে হবে। একই প্রতীক বরাদ্দের জন্য একাধিক প্রার্থী দাবী জানালে তাদেরকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রতীক পছন্দের আহবান জানাতে পারেন। যদি তারা সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হন তাহলে লটারি মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দ করবেন। উল্লেখ্য যে, একাধিক স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে কোন প্রার্থী ইতোপূর্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে তিনি তার পছন্দের প্রতীক প্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ পাওয়ার অধিকারী হবেন, যদি না তা কোন দলের জন্য সংরক্ষিত হয় যা ইতোমধ্যে অন্য কাউকে বরাদ্দ করা হয়।
নির্বাচনী সহায়তা ও সরবরাহ অধিশাখা হতে সরবরাহকৃত হালনাগাদ (সংশোধিত) স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকা (পরিশিষ্ট-খ) দেওয়া হলো।
প্রার্থীর মৃত্যুবরণ: প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোন বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থী যদি মৃত্যুবরণ করেন অথনা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ১১ক ও ৯১৬ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী যদি প্রার্থিতা বাতিল হয়, তবে অনুচ্ছেদ ১৭ এর দফা (১) অনুসারে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন কার্যক্রম বাতিল করতে হবে। এরপর গৃহীত ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।
কমিশন উক্ত নির্বাচনী এলাকার জন্য নতুন নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করবেন। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠানে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। তবে উক্ত বিধানের শর্ত অনুসারে এরূপ খাতিলকৃত সময়সূচিতে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাদের পরবর্তী কার্যক্রমে নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে না এবং জামানতের অর্থও জমা দিতে হবে না।
'না ভোট' এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ১৪ এর অধীন মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর যদি একজন বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থী থাকেন অথবা অনুচ্ছেদ ১৬ অনুসারে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর যদি একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থাকেন, তাহলে অনুচ্ছেদ ১৯ এর বিধান অনুসারে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং 'না ভোট' এর মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা 'না ভোট' এর চেয়ে বেশী হলে, রিটার্নিং অফিসার, গণবিজ্ঞপ্তি দ্বারা, উক্ত প্রার্থীকে উক্ত আসনে নির্বাচিত হয়েছেন বলে ঘোষণা করবেন। আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর তুলনায় 'না ভোট' এর সংখ্যা বেশী হলে উক্ত আসনে পুনরায় তফসিল ঘোষণা পূর্বক নির্বাচন করতে হবে।
উক্তরূপ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে 'না ভোট' বেশি হলে, দ্বিতীয়বার নির্বাচনকালেও যদি কেবল একজন ব্যক্তি বৈধভাবে মনোনীত হন কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে অবশিষ্ট থাকেন, সেক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার, গণবিজ্ঞপ্তি রায়া, উক্ত প্রার্থীকে উক্ত আসনে নির্বাচিত হয়েছেন বলে ঘোষণা করবেন।