বাসস
  ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:১৮

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সোমবার রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ছবি : বাসস

রংপুর, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

তিনি আজ সকালে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত রংপুর জেলা কর্মশালা- ২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। 

মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম- ৬ষ্ঠ পর্যায় প্রকল্পের অধীনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এ কর্মশালার আয়োজন করে। 

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতা একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের পূর্বশর্ত।  সামাজিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের ওপর।

এদেশে নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। সবাইকে নিয়েই আমাদেরকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে। এখানে যদি অস্থিরতা কিংবা অসন্তোষ থাকে তাহলে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। 

মানুষের মনকে উদার ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।  

ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করাকে জঘন্য কাজ উল্লেখ করে ড. খালিদ বলেন, এদেশে বহুদিন ধরে ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ, কটূক্তি, বক্রোক্তি কিংবা ব্যঙ্গ করার অসুস্থ মানসিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা হীন প্রকৃতির মানুষেরাই করে থাকে। ধর্ম অবমাননার অজুহাতে সহিংস ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। ধর্ম অবমাননা যেমন আইনের চোখে অপরাধ তেমনি ব্যক্তি বিশেষের অপরাধে তাকে কিংবা সম্প্রদায়কে বেআইনিভাবে শাস্তি দেয়া আরো বেশি অপরাধ। 

 মানবিক হওয়ার জন্য সকলের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান। 

এছাড়া, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। 

প্রত্যেককে নিজের ধর্মগ্রন্থ অধ্যায়নের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি নিজেদের ধর্মের বাণীগুলোকে অনুধাবন করে আমাদের জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারি, তাহলে আমাদের জীবন আলোকিত হবে। 

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী তপন চন্দ্র মজুমদার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব) ছাদেক আহমদ, প্রকল্প পরিচালক নিত্য প্রকাশ বিশ্বাস, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসেন ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টি পরিতোষ চক্রবর্তী  বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। 

এ প্রকল্পের অধীনে দেশের ৭ হাজার ৪০০ টি মন্দিরভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এরমধ্যে ৫ হাজার প্রাক-প্রাথমিক,  ১ হাজার ৪০০  ধর্মীয় বয়স্ক ও ১ হাজার ধর্মীয় শিশু শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে।  এ সকল শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিবছর ২ লাখ  ২২ হাজার শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিক ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে । 

এ প্রকল্পের আওতায় রংপুর জেলায় ১৪৯টি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এ প্রকল্প শিক্ষা প্রসারের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি বা দেশের বেকারত্ব দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। 

দিনব্যাপী এ কর্মশালায় রংপুর জেলার প্রকল্প পরিচালিত শিক্ষা কেন্দ্রসমূহের শিক্ষক, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জেলা প্রশাসন, জেলা ও উপজেলা মনিটরিং কমিটির সদস্য, শিক্ষার্থী অভিভাবক, শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে এরূপ মন্দিরের সভাপতি বা সম্পাদক, সনাতন ধর্মীয় প্রতিনিধি, ট্রাস্টি ও সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।