শিরোনাম

দিলরুবা খাতুন
মেহেরপুর, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): কয়েক দিন ধরে টানা শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় জেলার জনজীবন কার্যত জবুথবু হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীত জনজীবনকে কঠিন করে তুলেছে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষ। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার ঘন চাদরে ঢেকে থাকছে চারপাশ।
তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। শীতের তীব্রতায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। রাত ৮টা বাজতে না বাজতেই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিচ্ছে। রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া মানুষরা শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না। কাজ না থাকায় তাদের দৈনন্দিন আয়ে টান পড়েছে। শীত নিবারণে অনেকে খড়কুটো, শুকনো পাতা ও কাঠ জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছেন। আজ সোমবার মেহেরপুর শহরের কাথুলী রোডে কয়েকজনকে কাঠ জ্বালিয়ে তাপ নিতে দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে এই দৃশ্য আরও প্রকট।
শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে। চিকিৎসকেরা উষ্ণ পোশাক ব্যবহারের পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। শীতার্তদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা জরুরি হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও অসহায় মানুষের পাশে দ্রুত সহায়তা পৌঁছানো না গেলে দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক অলোক কুমার সাহা বাসসকে বলেন, তীব্র শীতে শিশু, বয়স্ক ও গর্ভবতী নারীদের বিশেষ যত্নে রাখতে হবে। এসময় যাতে তারা কোনো ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত না হয়ে সেজন্য তাদের গরম জামাকাপড়ের পাশাপাশি উষ্ণ খাবার খেতে হবে। এসময় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা, কাশি, জ্বর ইত্যাদি রোগ হতে পারে। যা সবার জন্যই বিপজ্জনক।
মেহেরপুর শহরের রিকশা চালক আব্দুল হামিদ বাসসকে বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডায় মানুষ বের না হওয়ায় যাত্রী কমে গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক রোজগার হচ্ছে আর কয়েকদিন এ অবস্থা থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।’
নতুন সাহা বস্ত্রালয়ের মালিক প্রকাশ সাহা বলেন, ‘তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে খুলতে বেলা ১১টা বেজে যাচ্ছে। ক্রেতা না থাকায় আবার রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হচ্ছে। বেচাকেনা অনেক কমে গেছে।
মেহেরপুর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, আজ সোমবার জেলায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে।