বাসস
  ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৫

প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের অপেক্ষায় বাগেরহাট

/ আজাদ রুহুল আমিন /

বাগেরহাট, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট বুধবার বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল করেছে। নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার বাগেরহাট -১ (মোল্লাহাট-চিতলমারী-ফকিরহাট), বাগেরহাট -২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট -৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট -৪ (মোরেলগঞ্জ-শরনখোলা) বিন্যস্ত করে গেজেট প্রকাশ  করেছে। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আনন্দ উচ্ছ্বাস পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জেলার ১৫ লাখ ভোটারের জল্পনা কল্পনা এখন প্রার্থীদের নিয়ে। ধানের শিষ প্রতীকে চারটি আসনে কারা পাচ্ছেন মনোনয়ন তাই দেখার অপেক্ষায় তারা। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরই বাগেরহাট জেলা শহর ও উপজেলা এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান, গল্পের আড্ডায় প্রাধান্য পাচ্ছে কে পাচ্ছেন বিএনপির সোনার টিকিট? 

সাধারণ ভোটার এবং এবার যারা প্রথম ভোট প্রয়োগ করবেন সেসব তরুণরা অধীর আগ্রহ ভরে অপেক্ষা করছেন। তাদের একটাই দাবি, আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যাদের রয়েছে বিরত্বগাথা,  সেসব ত্যাগী নেতাকেই যেন মনোনয়ন দেওয়া হয়।

সমুদ্র উপকূলবর্তী সুন্দরবনের পাদদেশে দক্ষিণাঞ্চলের অপার সম্ভাবনাময় জেলা বাগেরহাট। এ অঞ্চল দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটকদের বিচরণ ক্ষেত্র। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ষাটগম্বুজ মসজিদসহ এ জেলার রয়েছে নানা ঐতিহ্যের ভাণ্ডার। এখানকার মানুষ হাঙর, কুমির, বাঘ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে জীবন সংগ্রামে অবতীর্ণ। তাই বাগেরহাটের গুরুত্ব বিশ্বের দরবারে অনস্বীকার্য।

বাগেরহাটের ৯ টি উপজেলা, ৭৫ টি ইউনিয়ন এবং ৩ টি পৌরসভা নিয়ে ৪ টি নির্বাচনি আসনে রয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থী। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর ওবায়দুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার এটি এম আকরাম হোসেন তালিম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, ডক্টর লায়ন ফরিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, অ্যাডভোকেট শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান, ডক্টর কাজল মনির এবং  খান মনিরুল ইসলামসহ অনেকেই বিএনপির টিকিট পেতে আগ্রহী।

অধিকাংশ প্রার্থী যারা দীর্ঘ ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, হামলা মামলার শিকার হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এমন অনেক ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা আছেন জেলায়। বুধবার থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপির হাইকমান্ড থেকে প্রার্থী ঘোষণা না আসায় কোনো নেতা কর্মীই যেন স্বস্তি পাচ্ছেন না। কর্মীদের স্লোগান ‘ধানের শিষ যার, আমরা সবাই তার’।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর রহমান আলম বাসসকে বলেন, আজ শনিবার জেলার পাঁচ নেতাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে। সেখানে প্রথমে বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটির সাথে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়াল মিটিং হবে। তারপর বাগেরহাট জেলার নেতা ও প্রার্থীদের সাথে তারেক রহমানের দ্বিতীয় ভার্চুয়াল মিটিং হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারপরেই  বাগেরহাটের ৪ টি আসনের প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটি এম আকরাম হোসেন তালিম জানান, দল থেকে যাকেই নমিনেশন দেওয়া হবে, দেশ, জাতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে সেই প্রার্থীর পক্ষেই প্রচার প্রচারণা করা হবে। বিএনপি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি দল। এখন সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনি আমেজে সবাই একসাথে কাজ করতে প্রস্তুত।