শিরোনাম

ঝিনাইদহ, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফশিল ঘোষণার পর থেকেই ঝিনাইদহের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কর্মী, উদ্যোক্তা, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা ইসি ঘোষিত তফশিলকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোট আয়োজনের ঘোষণাকেও স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ও একই দিন গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে ঝিনাইদহবাসীর প্রতিক্রিয়া জানা যায়।
জেলার অন্যতম সমাজকর্মী জহির রায়হান বাসসকে বলেন, ‘নির্বাচনের তফশিল আরও আগে ঘোষণা হওয়া দরকার ছিল। কারণ বারবার নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে নানান রকম গুজব ছড়িয়েছে। মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে। যাই হোক, দিন শেষে তফশিল ঘোষণা হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দূর হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া তো সরকার শক্তিশালী হতে পারে না। মানুষ নানান কারণে অনিশ্চিয়তার মধ্যে ছিল।
তিনি বলেন, ‘গণভোট হতে হবে। নির্বাচনের দিন গণভোট হলে ভোটারদের সুবিধা হবে। নতুন করে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে গণভোট জরুরি। গণভোটের রায় নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে কার্যকর করা হবে বলে মনে করি।’
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী (মুদি দোকানী) তরিকুল ইসলাম বাসসকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় আছি। নির্বাচন না হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। মানুষ কেমন যেন এক অস্বস্তির মধ্যে ছিল। তফশিল ঘোষণা হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।’
শহরের রিক্সা চালক তমাল হোসেন বাসসকে বলেন, দেশে বহু বছর ধরে উৎসবমুখর ভোট হয়নি। এবারের ভোট যেন উৎসবমুখর হয়, সেই প্রত্যাশা। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, আমরা নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ চাই। নির্বাচন হলে সামাজিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। আমরা তফশিল ঘোষণাকে স্বাগত জানাই।
জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাসসকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংশয় ছিল। কিন্তু সব সংশয় আজ দূর হয়েছে।
আমরা ইসির এই ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। আশা করি, আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর। একই সাথে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর শহিদ ও আহতদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে। আমি মনে করি, গণভোটে ‘হ্যা’ জয়যুক্ত হবে এবং নির্বাচনের পর দেশে একটি গঠনমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আলী আজম মোহাম্মদ আবু বকর বলেন, তফশিল ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। নির্বাচন উৎসবমুখর হবে ইনশাআল্লাহ। গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটাররা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে গণভোটে অংশ নেবেন, এটাই স্বাভাবিক।
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ বাসসকে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দীর্ঘদিন ধরে আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করার কারণে শেখ হাসিনার আমলে দেশে বহু মানুষ গুম খুনের শিকার হয়েছে। আজ আমরা নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছি। জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তফশিল ঘোষণা করেছে। আমরা ঝিনাইদহবাসীর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানাই। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু গণভোট প্রসঙ্গে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলো আগেই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। কাজেই গণভোটের ঘোষণাকেও আমরা স্বাগত জানাই।
নতুন বাংলাদেশ গঠনে আগামী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।