শিরোনাম

মো. আসাদুজ্জামান
সাতক্ষীরা, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস) : সব জল্পনা কল্পনার অবসান শেষে বহু প্রতিক্ষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। এই তফশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে কেটে গেল নির্বাচনি সব অনিশ্চয়তা।
তফশিল ঘোষণার পরপরই সাতক্ষীরায় উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচনি হাওয়া বইছে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাট বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে এখন নির্বাচনি আলোচনা সমালোচনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সাধারণ ভোটাররা। একই সাথে প্রার্থীরাও নতুন উদ্যমে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
সাতক্ষীরা শহরের চায়ের দোকানি সিরাজুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় বাসসকে বলেন, চায়ের দোকানে বসে নানা শ্রেণির মানুষ চা পান করে থাকেন। এতদিন এক গ্রুপ বলতেন নির্বাচন হবেনা। আর এক গ্রুপ বলতেন, নির্বাচন হবে। তবে, আজ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর নতুন উদ্যম ফিরে এসেছে। মানুষ সন্ধ্যার পর থেকে এখন শুধু নির্বাচনি গল্প নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তিনি জানান, শীতের সময় চায়ের দোকানে নির্বাচনি আলাপ আলোচনার সাথে সাথে তার বেচা কেনাও বাড়বে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ও জেলা গণফোরামের সভাপতি আলীনুর খান বাবুল বাসসকে বলেন, ‘নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সরকার প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আজ নির্বাচনি ট্রেনে তুলে দিল। এজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। তবে, বাংলাদেশকে একটি গ্রুপ পাকিস্তান বানানোর জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ওই গ্রুপটিই চেয়েছিল নির্বাচন বানচাল করার জন্য। নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার পরও তাদের নির্বাচন বাতিলের ষড়যন্ত্র কিন্তু থামেনি।’
তিনি বলেন, ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থান মানুষ যে আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে করেছিল, সে আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন কিন্তু এখনো সাধারণ মানুষ পায়নি। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ও ৭২ এর সংবিধান ধ্বংস করার জন্য এখনো একটি কুচক্রী মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।’
এনসিপির জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আহছান উল্লাহ প্রধান নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, মানুষ অধীর আগ্রহে বসে আছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য। গত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনামলে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।
এবার যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয় সেজন্য তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুল হাসান বলেন, সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তফশিল ঘোষণা করায় বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মাঝে নির্বাচনি আমেজ ফিরে এসেছে। একই সাথে সাধারণ ভোটারদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। দীর্ঘ ১৬ বছর মানুষ কোনো ভোট দিতে পারেনি। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। মানুষ এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভোট দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজ এই তফশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগামীতে এ দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই নির্বাচনে মানুষ তার পছন্দের দলকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনবে বলে আশা করি।’