শিরোনাম

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): সৌদি আরবগামী কোনো বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী যদি সৌদি কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত মেডিকেল টেস্ট সেন্টার থেকে সেবা গ্রহণকালে হয়রানির শিকার হন, সে বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণের জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নিয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া এবং গালফ হেলথ কাউন্সিলের মহাপরিচালক সুলায়মান বিন সালেহ আলদাখিলের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ প্রস্তাব করা হয়।
বাসস প্রাপ্ত সরকারি নথি থেকে জানা যায়, ড. নিয়ামত উল্লাহর রিয়াদ সফরকালে গালফ হেলথ কাউন্সিলের সদর দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ড. নিয়ামত বাংলাদেশে অভিবাসী কর্মীদের চিকিৎসা - পরীক্ষা পরিচালনাকারী গালফ হেলথ কাউন্সিল-অধিভুক্ত মেডিকেল সেন্টারগুলোর অনিয়মের বিষয়টি মহাপরিচালককে অবহিত করেন।
মন্ত্রণালয় আরও উল্লেখ করে, এসব সেন্টার অনেক সময় গালফ হেলথ কাউন্সিলের নির্দেশনা মানে না, ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট তৈরি করে, অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে এবং সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমওএফএ কেএসএ) পোর্টালে পরীক্ষার ফলাফল আপলোড করতে ব্যর্থ হয়।
এছাড়া ঢাকা ও বড় শহরকেন্দ্রিক টেস্ট সেন্টারগুলোতে দূরবর্তী গ্রামের কর্মীদের যাতায়াতজনিত অতিরিক্ত সময়, খরচ ও ভোগান্তির বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে।
গালফ হেলথ কাউন্সিলের স্থায়ী তদারকি অফিসের অনুপস্থিতি এবং কার্যকর নজরদারির অভাবও আলোচনায় উল্লেখ করা হয়।
এই সমস্যাগুলো সমাধানে বাংলাদেশ প্রস্তাব করে, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে তালিকাভুক্ত না হলে কোনো মেডিকেল টেস্ট সেন্টারকে গালফ হেলথ কাউন্সিল যেন অনুমোদন না দেয়। এর মাধ্যমে প্রতারণা, হয়রানি ও অভিবাসী কর্মীদের শোষণ রোধ করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং গালফ হেলথ কাউন্সিলের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমন্বয় ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিয়মিত বৈঠকের প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ১১০টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ফিল্ড অফিসের মাধ্যমে ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে।
বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়। উভয় পক্ষই উন্নত যোগাযোগ ও সমন্বয়ের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং গালফ হেলথ কাউন্সিল থেকে একজন করে ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং অভিবাসী কর্মীদের শোষণ থেকে রক্ষা করতে ১১০টি টিটিসির মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর বিষয়ে সম্মত হয়।
মন্ত্রণালয়ের নথিতে আরো বলা হয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গালফ হেলথ কাউন্সিলকে একটি চিঠি দেবে, যার মাধ্যমে চিকিৎসা পরীক্ষার তদারকির দায়িত্ব স্পষ্ট করা ও মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরা এবং গালফ হেলথ কাউন্সিলের নির্দেশনার আরও ভালোভাবে যাতে বাস্তবায়ন নিশ্চিত হয়।