বাসস
  ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:০১

কয়েলের ওপরও ঘোরে মশা, অতিষ্ঠ নওগাঁ পৌরবাসী

ছবি : বাসস।

বাবুল আখতার রানা

নওগাঁ, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নওগাঁ পৌরসভা প্রথম শ্রেণির। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার জনসংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজারের ওপর।

পৌরসভায় যত্রতত্র পড়ে থাকে ময়লা আবর্জনার স্ত’প। অধিকাংশ ড্রেনে নেই ঢাকনা। আর্বজনার চাপে ড্রেনের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। জন্ম নেয় মশা ও মাছি। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করা ও যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার কারণে মশার উৎপাত বেড়েছে। এর ওপর রয়েছে মশক নিধন কার্যক্রমের অভাব। এতে মশার উৎপাতে নাকাল পৌরবাসী।

পৌরবাসীর অভিযোগ, মশার উপদ্রব এমনভাবে বেড়েছে যে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারছে না। সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। বাসা-বাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ কোনো স্থানেই মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না কেউ। মশার কয়েল, ধোয়া ও স্প্রে সব কিছুই যেন মশার কাছে হার মানছে। এতে বাড়ছে ডেঙ্গু। 

এছাড়া দিনের আলোতেও মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কয়েল ব্যবহার করতে হচ্ছে। এত বাড়তি টাকাও খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। একইসঙ্গে অভিযোগ, পৌরকর বাড়ানো হলেও পৌর সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।  

জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, জেলায় নভেম্বরের আজ রোববার পর্যন্ত ৫৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া অক্টোবরে ১২০ জন এবং সেপ্টেম্বর ১১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে।

শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা শামিম আনসারী বলেন, সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করতে হয়। তারপর যেন রেহাই নেই। কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এমন অবস্থা যে কয়েলের ওপরও মশা ঘোরাঘুরি করে। দিনেও কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। আর মশা যেখানে কামড়ায় সেখানে জ্বালা-যন্ত্রনা করে ও ফুলে উঠে। কয়েল কিনতে প্রতিদিন ১০ টাকা খরচ হয়। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা আছে।

শহরের ডিগ্রী মোড় এলাকার শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, এতো বেশি মশার উপদ্রব বেড়েছে যে ঠিকমতো পড়াশুনা করা যায়। কয়েল জ্বালিয়ে মশারির ভেতরে পড়তে হচ্ছে।

শহরের কোমাইগাড়ী মহল্লার আসফাক উদ্দিন বলেন, বাসা থেকে কিছুদূরে পৌর ময়লার ভাগাড়। পৌরসভার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মশক নিধনের কার্যক্রম করা হলেও বাকিগুলোতে তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয় না। বছর বছর বাড়ানো হয় পৌরকর। অথচ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী।

এ বিষয়ে নওগাঁ পৌরসভার নিবাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মশক নিধনের জন্য তিনটি ফগার মেশিন ও তিনটি হ্যান্ড স্প্রে মেশিন আছে। গত দুই বছর থেকে পৌরসভায় মশক নিধনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পৌরসভার রাজস্ব আয় থেকে মশক নিধনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিটি মহল্লায় পর্যায়ক্রমে মশক নিধনের কাজ করা হয়। হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে মশার লাভা ধ্বংস করা হচ্ছে।