শিরোনাম

সিলেট, ৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, নোট অব ডিসেন্টসহ জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট চায় বিএনপি।
তিনি আজ শনিবার সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। দুপুরে নগরের একটি হোটেলে ‘সমাজে নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি’র নির্বাচনী অগ্রাধিকার বিষয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
সেলিমা রহমান বলেন, নোট ডিসেন্টসহ বিএনপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নোট অব ডিসেন্ট বাদ দিয়ে জাতির সঙ্গে একটি নতুন খেলা খেলেছে।
গুম কমিশনের কাজ আশানুরূপ কার্যকর হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের পরিবার গুমের শিকার হয়েছে তারাই বলেছে, তাঁরা গুম কমিশনের কাছে যেভাবে আশা করেছিল সেভাবে কার্যকর কোনো কাজ গুম কমিশন করতে পারেনি।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী।
আলোচনা সভায় সেলিমা রহমান বলেন, গ্রামের নারীরা অত্যন্ত সরল সহজ, এই সুযোগ নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যবহার করে জান্নাতের টিকিট দেওয়ার নামে নারীদেরকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা প্রত্যেকে ধার্মিক, কিন্তু ধর্ম নিয়ে যে রাজনীতি হয় না এটি সবাইকে বুঝাতে হবে।
তিনি বলেন, প্রান্তিক এলাকার নারী জনপ্রতিনিধিরাই আমাদের নির্বাচনের অন্যতম চালিকা শক্তি। আপনারাই নিজ এলাকার সব কিছু জানেন। আপনাদের সঙ্গে জনগণের সংশ্লিষ্টতা আছে। আপনারাই তৃণমূলের নারীদের সঙ্গে মূল সেতুবন্ধন। গ্রামের নারীরা খুবই সরল সহজ, তারা বেগম খালেদা জিয়া ও ধানের শীষকে ভালোবাসেন। গ্রামের নারীরাই নেত্রীর জন্য নামাজ পড়ে, রোজা রেখে দোয়া করেছেন, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রার্থনা করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া এত নির্যাতনের পরও দেশ ছেড়ে কোথাও পালিয়ে জাননি।
তিনি দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে।
সেলিমা রহমান আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচিতে সব রকম সংস্কারের কথা, সবার অধিকারের কথা রয়েছে। আমরা ৩১ দফা নিয়ে মানুষের কাছে যাই, কিন্তু ৩১ দফার কোনো বিষয়ই মানুষকে বুঝিয়ে বলি না। আমাদেরকে এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নারী ক্ষমতায়নের বীজ বপন করেছিলেন। তিনি যৌতুক বিরোধী আইন করেছেন, কর্মক্ষেত্র সহ সর্বক্ষেত্রে নারীদের কোটা তৈরি করেছিলেন। নারীদেরকে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মেয়েদেরকে কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। নারীরাই একটি পরিবারের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। আপনারা যখন ঘরে ঘরে যাবেন তখন নারীদের সঙ্গে কথা বলবেন।
সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপি নারীদের জন্য যা যা করেছে, সেই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। তাই আমাদেরকে প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় টিম গঠন করে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা জোরদার করতে হবে। সিলেটবাসীর প্রিয় নেতা এম. ইলিয়াস আলী ও ইফতেখার আহমদ দিনারকে গুম করা হয়েছে। তারা দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে ছিল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে সিলেট বিভাগের বর্তমান ও সাবেক নারী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা দেশের নারী ও শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সিলেটের প্রতিটি আসনে ধানের শীষ প্রতীককে বিপুল ভোটে বিজয়ী করুন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, এডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুল হক, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য নইমা খন্দকার।
অনুষ্ঠানে বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুসলিমা আক্তার চৌধুরী, সুফিয়া আক্তার হেলেন, খোদেজা রহিম কলি, স্বপ্না বেগম, সুফিয়া সোলেমান কলি, নাসিমা আক্তার খান, নুরুন্নাহার, মো. মদিনা আক্তার, হেলেনা চৌধুরী, মোছা. রেহানা বেগম, মনোয়ারা বেগম, দিবা রানী দে বাবলী, শাহেনা আক্তার, সৈয়দা লাভলি সুলতানা, নাদিরা বেগম প্রমুখ।