শিরোনাম

ঢাকা, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতি সাধন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাইস চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। কমিশনের সহকারী পরিচালক মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন সিআরআই-এর চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়, ভাইস চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ, ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, নসরুল হামিদ বিপু, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাব্বির বিন শামস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর আপিল সদস্য রওশন আরা আক্তার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও এনবিআর-এর সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম. মুস্তফা কামাল। তারা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করেছেন।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে জনকল্যাণের নামে গঠিত নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর অনুকূলে প্রাপ্ত অর্থের ক্ষেত্রে আয়কর আইনের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তারা আয়কর মওকুফ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে নিজেদের বা অপরকে অন্যায়ভাবে আর্থিকভাবে লাভবান করেছেন। জনকল্যাণমূলক কাজে অর্থ ব্যবহার না করে এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও এসআরও জারি করে অবৈধভাবে কর সুবিধা গ্রহণ ও প্রদান করা হয়, যা অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের শামিল।
দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৩-১৪ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত সিআরআই মোট ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা অবৈধভাবে আয় করে, যার মধ্যে ২৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৬ টাকা ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়। একাউন্টে জমার পরিমাণ পাওয়া যায়- ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। অবৈধ আয়-ব্যয় থেকেও আসামিরা ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫২১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
তাছাড়া, সিআরআইয়ের নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৪৩৯ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর বিধি লঙ্ঘন করে ৩৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৪২ টাকা আয়কর প্রদান না করার ফলে সরকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
দুদক জানায়, মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭- এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারার অধীনে অভিযোগ করা হয়েছে।