শিরোনাম
নীলফামারী, ৫ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস): জেলায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকাল ৬ টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ঘণ্টার ব্যবধানে সেখানে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েণ্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের উজানে জিরো পয়েণ্টে ডানতীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
বাধ রক্ষায় বাঁশের পাইলিং ও বালির বস্তা ফেলা অব্যাহত আছে।
এদিকে, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরশ্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তা পারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়ি ঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম জানান, রোববার দুপুরের পর তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে শুরু করে। পানি বৃদ্ধির ফলে এলাকার রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন গ্রামের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।
ডালিয়ায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে নদীর নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, বেলা ১২টায় ৫২ দশমিক ০০ মিটার, বেলা ৩টায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ডালিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় ব্যরাজ পয়েণ্টে বিপৎসীমার ১৩ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।’
তিনি জানান, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েণ্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামক স্থানে ডানতীর প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটি মেরামতের কাজ চলছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব ক’টি জলকপাট (৪৪টি) খুলে রাখা হয়েছে।