শিরোনাম
-আল আমিন শাহরিয়ার-
ভোলা, ৩ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস): ইলিশ মাছ ধরায় ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আগামিকাল শনিবার থেকে। তাই শেষদিন শুক্রবার ভোলা জেলার বিভিন্ন বাজার ও আড়তে ছিল ইলিশ বেচা- কেনার ধুম।
শেষ সময়ে স্থানীয় মাছঘাট ও মৎস্য বন্দরগুলো ছিল খুবই সরগরম। শুক্রবার শেষ বিকেলেও জেলার মাছঘাটগুলোতে ইলিশ বেচাকেনা ছিলো চোখে পড়ার মতো।
আজ শুক্রবার ভোর থেকেই দ্বীপ জেলা ভোলার বাজার, আড়ত, মাছঘাট ও মৎস্য বন্দরগুলো ছিল ইলিশ মাছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের আসা- যাওয়ায় সরগরম। আড়ৎদাররা কেউ মাছের ঝুড়ি ভরেছেন মোকামে ইলিশের শেষ চালান পাঠাবেন বলে। পাইকাররা জেলেদের কাছ থেকে ইলিশ কিনে বাজার আর নদী পাড়ে কেনা-বেচার পসরা বসিয়েছেন। সারাদিন দরদাম ও ইলিশ বিকি-কিনিতে লাভক্ষতির হিসেব-নিকেশ। শুক্রবার সকাল থেকেই ভোলার মেঘনা, তেতুলিয়া, কালাবাদর আর ইলিশা নদীরঘাটের আড়ৎ ও বাজারগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে ইলিশ কেনাবেচার এমন চিত্র।
ভোলা সদরের তুলাতুলি মাছঘাটে সরেজমিন দেখা গেছে, নদী থেকে ইলিশ শিকার করে নৌকা-ট্রলার নিয়ে একের পর এক ঘাটে ভিড়ছেন জেলেরা। শেষদিনে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পেয়ে আনন্দ সবার মনে। ইলিশের ঝাঁক নিয়ে ঘাটে আসতেই মূহুর্তেই যেন সব ইলিশ বিক্রি শেষ ! ঘাটের আড়ৎদার মো.জামালউদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত শুক্রবার ভোররাত থেকে ঘাটে প্রচুর ইলিশের সমাগম ঘটলেও তুলনামূলকভাবে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশী। তিনি জানান, ফজরের নামাজের পর ঘাটে সাধারণ ক্রেতাদের কারনে শেষদিনের মতো ইলিশ কিনে মোকামে পাঠাতে পারেননি।
তুলাতুলি ঘাটে ইলিশ মাছ কিনতে এসেছেন জেলা শহরের বাসিন্দা শেফালী বেগম। সাথে ছিলেন তার স্বামী রফিউদ্দিন। তিনি জানান, আগামী তিন সপ্তাহের বেশী সময় ইলিশ মাছধরা বন্ধ থাকবে তাই কিনতে এসেছেন। ইলিশ কিনে রেফ্রিজারেটওে রাখবেন। জানালেন, ঘাটের কবির মাঝির কাছ থেকে তিনি সাড়ে ১২ হাজার টাকার ছোট-বড় ইলিশ কিনেছেন। দাম যাই হোক তাতে আফসোস নেই, ইলিশ পেয়েছেন এতেই সন্তষ্ট শেফালী বেগম।
মাছ ঘাটে ইলিশ কিনতে এসেছেন শহরের উকিল পাড়া'র বাসিন্দা নিজামুদ্দিন। তিনি জানান, ঢাকা থেকে মেয়ে ও জামাই আসছেন আগামি সপ্তাহে। শনিবার তেকে সামনে অনেকদিন নদীতে মাছ ধরা বন্ধ,তাই আপ্যায়নের জন্য শুক্রবারই ইলিশ কিনতে হবে।
শহরতলীর ইলিশা মাছঘাটের আড়তদার বাদশা মিয়া জানান, মোকামে আজ মাছ পাঠাতে না পারলেও সকাল থেকে স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে খুচরাভাবে ইলিশ বিক্রি করে ভালোই লাভ হয়েছে। এই ঘাটে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় জেলে মাকসুদ মাঝি, মনির মাঝি ও কানাই লালের সাথে। তারা জানান, শুক্রবার ভোররাত থেকে মেঘনা নদীতে জাল ফেলে প্রচুর ইলিশ পেয়েছেন কিন্তু তেমন লাভ হয়নি। কারন, মহাজনের দাদন শোধ করতে গিয়ে ইলিশ চলে গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, শনিবার (৪ অক্টোবর) থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর ২২ দিন পর্যন্ত ভোলা উপকুলের মৎস্য অভয়ারণ্যের ১৯০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সবধরনের মাছধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এ সময়ে কেউ মাছ ধরতে নদীতে নামলে কিংবা বাজারগুলোতে ইলিশ মজুত বা বেচাকেনা করতে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।