শিরোনাম
কুমিল্লা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস): জেলায় ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৯ জনকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া হবে। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠিতব্য মাসব্যাপী টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে এসব টিকা দেওয়া হবে।
‘শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম’ প্রকল্পের আওতায় জেলার সংবাদকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কনসালটেশন কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা তথ্য অফিস, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এ কর্মশালার আয়োজন করে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
জেলা সিভিল সার্জন আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ বলেন, ‘এই ক্যাম্পেইনের আওতায় কুমিল্লা জেলায় মোট ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৯ জনকে টাইফয়েডের টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১ লাখ ৫৬ হাজার ১২৫ জনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।
টাইফয়েডের টিকাদান ক্যাম্পেইনের চলমান কার্যক্রমে কুমিল্লা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ শতাংশ পূরণ করেছে।
সিভিল সার্জন বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৫ হাজার ৭৪৯ জন। ইতোমধ্যে সাত লাখ ১৩ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, কমিউনিটি ক্লিনিকের আওতায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮০ হাজার ২৭০ জন। তাদের মধ্যে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৪৫ জন রেজিস্ট্রেশন করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যায় পড়ছেন। তাদের জন্য এনালগ পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করে হাতে টিকার কার্ড দেওয়া হচ্ছে।’
কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশে সংক্রমণজনিত রোগের অন্যতম প্রধান কারণ টাইফয়েড জ্বর। এটি স্যালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায়, যা মূলত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত টিসিভি টিকা কার্যকর ও নিরাপদ।
সারা বিশ্বে শিশুদের এ টিকা দেওয়া হচ্ছে এবং সামান্য জ্বর, ব্যথা বা অস্বস্তি ছাড়া কোনো জটিল প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
আসন্ন জাতীয় টিকাদান ক্যাম্পেইনে দেশের প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের ইপিআই স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিসিভি টিকা দেওয়া হবে।
কর্মশালায় আরো জানানো হয়, বাংলাদেশে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুরাই টাইফয়েডে বেশি আক্রান্ত হয়, তাই এ বয়সি শিশুদের এক ডোজ টিকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। ভবিষ্যতে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস বয়সি শিশুদের এ টিকা দেওয়া হবে।
আয়োজকদের মতে, সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে টাইফয়েড প্রতিরোধে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য। তারা আশা করেন, টিকা সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে পড়লে শিশু-কিশোরদের মধ্যে টাইফয়েড সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রচার ও সমন্বয়) ডালিয়া ইয়াসমিন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ও জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া জামারিন আনসারী। কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুল হক।
আলোচনায় অংশ নেন কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক আবুল হাসানাত বাবুল, মীর শাহালম, সাদিক মামুন, কামাল উদ্দিনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।