বাসস
  ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:০০

সুনামগঞ্জে শারদীয় দুর্গাপূজায় জমে ওঠেছে হাটবাজার

ছবি : বাসস

মো. আমিনুল হক

সুনামগঞ্জ, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : প্রতিবছরের ন্যায় জেলায় এবারো জমে ওঠেছে শারদীয় দুর্গাপূজার হাটবাজার। জেলা শহর ও উপজেলার প্রতিটি হাট বাজারে কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। 

সুনামগঞ্জ জেলার পৌর শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শহরের দোজা মার্কেট, নেজা প্লাজা, লন্ডন প্লাজা, মধ্যবাজার এলাকার বিভিন্ন বিপণিবিতান এবং হকার্স সমবায় মার্কেটে জোরেসোরে চলছে পূজার কেনাকাটা। ক্রেতারা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরেই পূজার কেনাকাটা চলছে। পূজা উদযাপন উপলক্ষে শঙ্খ, শাঁখা, সিঁদুরসহ পূজার সামগ্রী কেনাকাটায় ধুম পড়েছে। শহরের মধ্যবাজারের অলিগলিতে এখন ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়। ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই বেশি। 

কেনা কাটা করতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী সীমা জানান, বেশকিছু দিন ধরেই পূজার কেনাকাটা শুরু হয়েছে। শুক্র এবং শনিবার এই দুই দিন ছুটির দিন হওয়ায় অনেকেই কেনাকাটা সেরে ফেলছেন। 

অন্যদিকে, বিক্রেতারা বলছেন, আগের চাইতে এ সপ্তাহে বিক্রিও বেড়েছে। কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, জিন্স প্যান্ট ৬০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, ড্রপ সোল্ডার টিশার্ট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শার্ট ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পূজায় শাড়ি বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। দেশি, ইন্ডিয়ান, টাঙ্গাইলের জামদানী, তাঁতের সুতি শাড়ির কদরই বেশি। পাশাপাশি কসমেটিকস, জুতা বিক্রি হচ্ছে। 

শহরের মধ্যবাজার এলাকায় বিপণিবিতানে দেখা হয় কল্পনা রাণীর সাথে। পূজোর কাপড় কিনে ফিরছিলেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধ্যুতি, শাড়ি, ছোটদের টিশার্টসহ থ্রি পিস কিনেছি। এই বছর দামটা মোটামুটি আমাদের সাধ্যের মধ্যে আছে। আমি আমার পরিচিত একটি দোকানে কাপড় কিনেছি। তাই ন্যায্য মূল্যেই কিনতে পারছি।

শিক্ষক দেবব্রত জানান, তিনি স্বপরিবারে মার্কেটে এসেছেন। তিনি ছোট্ট ছেলে মেয়েদের জন্য টিশার্ট, জামা এবং স্ত্রীর জন্য শাড়িসহ বিভিন্ন কসমেটিক জাতীয় সামগ্রী কিনেছেন। পৌর এলাকার চাকুরীজীবি সীমা বলেন, পরিবারের সকলের জন্য কাপড় ছাড়াও কসমেটিকস এবং জুয়েলারি সামগ্রী কিনেছি। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম নিয়ন্ত্রণে আছে।

মধ্যবাজার এলাকায় এহসান মার্কেটের নিউ কাকলি’র বিক্রেতা রতন দাস জানান, কাপড়ের দাম নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে, দাম বাড়েনি। তবে এবার ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। বেচাকেনা এ বছর কম হচ্ছে।

ব্যবসায়ী তামিম বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি। কিন্তু পণ্য সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে কম। আমাদের দোকানে কসমেটিক জাতীয় পণ্য আছে। কম দামের মধ্যে আলতা, নেইল পলিস, টিপসহ বিভিন্ন ক্রিম বিক্রি হচ্ছে।

সূচিত্রা ফ্যাশনের বিক্রেতা রিংকু দাস বলেন, এ বছর পূজার বাজারে কেনাকাটা ভালোই হয়েছে। আমাদের দোকানে নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে একেবারে উচ্চবিত্ত পরিবারের সকল প্রকার ওয়ান পিস, টু পিস, থ্রি পিসসহ বিভিন্ন ধরনের টি শার্ট, প্যান্ট, জামদানী শাড়ি, ইন্ডিয়ান কালেকশন, টাঙ্গাইল শাড়ি, কাতান, সিল্ক, আড়ং এসব পর্যাপ্ত রয়েছে এবং বিক্রিও হয়েছে। বিশেষ করে সুতি কাপড়ের পোষাক বেশি বিক্রি হয়েছে। এই পোষাকগুলো পূজার চয়েসফুল পোষাক, এগুলো আরামদায়কও। এছাড়া বড়দের জামা ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা দামের উন্নত জর্জেট ড্রেস বিক্রি করেছি। 

ছাতক উপজেলার পৌর সভার বাসিন্দা নরেন্দ্র জানান, ছাতক পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন হবে বলে আসা করছি। হাটবাজার নিয়ন্ত্রনে আছে। 

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, পূজাকে কেন্দ্র করে আমরা প্রতিনিয়তই বাজারে দোকানগুলোতে মনিটরিং করছি। যদি কেউ দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে চেষ্টা করে, তা আমাদের জানালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।