বাসস
  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৪

ভালো নির্বাচন না থাকায় জুলাইয়ে অভ্যুত্থান ঘটেছে : ইসি সানাউল্লাহ

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে ভালো নির্বাচন না হওয়াই জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান কারণ।

তিনি বলেন, ‘যেসব কারণে আমরা জুলাই অভ্যুত্থান দেখেছি, তার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে দেশের ভালো নির্বাচন না থাকা। আপনারা একবার চোখ বন্ধ করে চিন্তা করুন-ভালো নির্বাচন হলে কি এমন ঘটনা ঘটতো?’

শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন ২০২৫’-এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স এসোসিয়েশন আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব বক্তব্য রাখেন।

নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ‘একটা জাতির ইতিহাসে এত অল্প সময়ে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং তার পরিবেশ খুব কমই তৈরি হয়। আমরা যদি আজকের বাস্তবতার পেছনের কারণ বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখতে পাব যে এর এক নম্বর কারণ হচ্ছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়া। আসুন, এই সত্যটি আমরা অকপটে স্বীকার করি।

আমরা যখন কোনো রোগকে মেনে নিই, তখনই তো তার চিকিৎসা সম্ভব হয়। আর যদি আমরা সমস্যা স্বীকারই না করি, তাহলে তার সমাধান কীভাবে হবে?’

তিনি বলেন, ‘যদি আপনি জুলাইয়ের ঘটনার পেছনে একের পর এক সম্ভাব্য কারণ বাদ দিতে থাকেন, তাহলে শেষ পর্যন্ত যে কারণটি রয়ে যাবে, সেটি হচ্ছে-পচা নির্বাচন বা নির্বাচনের নামে প্রহসন। আমরা যদি এই বাস্তবতা থেকে বের হতে চাই, এই সমস্যার সমাধান করতে চাই, তাহলে আমাদের আজকের এই সম্মেলন থেকেই প্রতিজ্ঞা করতে হবে-আর কখনো আমরা এ ধরনের নির্বাচন করবো না, বা অংশগ্রহণ করবো না।’

তিনি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সতর্ক করে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আপনাদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই-এই নির্বাচন কমিশন কখনোই আপনাদেরকে পক্ষপাতদুষ্ট, অনৈতিক বা দুর্নীতিগ্রস্ত কোনো নির্বাচনের জন্য নির্দেশনা দেবে না। যদি আপনারা কেউ স্বেচ্ছায় পক্ষ হয়ে কাজ করেন, তাহলে তার দায়ভার আপনাকেই বহন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন আপনাকে কোনো প্রকার সুরক্ষা দেবে না। এটি আপনার মনে গেঁথে নিন। এই কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো চাপ, কোনো অস্পষ্ট নির্দেশনা বা রেফারেন্স দেওয়া হবে না। আইন অনুযায়ী, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হবে এবং হতেই হবে।’

এ সময় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররাও নিজেদের বক্তব্যে কমিশনের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘গত ১০ মাস ১০ দিনে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে যে, এই কমিশন একটি শক্ত এবং মেরুদণ্ডসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান। এই কমিশনের মেরুদণ্ড যদি শক্ত না হতো, তাহলে কোনো অবস্থানে আমরা দাঁড়াতে পারতাম না। এই কমিশন কোনো পক্ষপাত কিংবা বিরাগের ভিত্তিতে কাজ করেনি ভবিষ্যতেও করবে না।’

নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘আমরা এবার একটি জেন্ডার- ইনক্লুসিভ নির্বাচন আয়োজন করবো। নারীদের আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। ভোটের দিন তারা যেন পুরুষদের সমান অধিকার ভোগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।’