শিরোনাম
।। মো. শফিকুল ইসলাম।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস): হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫৭৮টি মণ্ডপে চলছে শেষ সময়ের প্রতিমা স্থাপনের কাজ। রংতুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ণিল সাজে। প্রতিটি প্রতিমাকে রংতুলির নিপুণ আঁচড়ে রাঙাতে ব্যস্ত শিল্পীরা। চলছে সাজ-সজ্জার কাজও। দেবী দুর্গার সাথে সাথে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী আর সরস্বতী দেবীকেও।
আগামী কাল রোববার ষষ্ঠী পূজা। এ উপলক্ষে মায়ের ভক্তরা দেবী দুর্গার রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তারা বলছেন, মায়ের আগমনের ক্ষণকালে ভক্তরা সকলেই পুলকিত। ভক্তদের মনে লেগেছে আনন্দের দোলা।
পাইকপাড়ার বাসিন্দা উত্তম কুমার মল্লিক বাসসকে বলেন, মায়ের আগমন উপলক্ষ্যে আমরা সবাই বেশ খুশি। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেছি। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মায়ের রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করবো।
মধ্যপাড়ার তাপস পাল বলেন, আমরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি কখন আসবে মাহেন্দ্রক্ষণ। জগৎ জননী দেবীর কাছে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণ প্রার্থনা করবো। মা যেন সকল রোগশোক থেকে আমাদের মুক্ত রাখে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া গগন সাহা বাড়ি রোড সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিস কুমার সাহা জানান, এ বছর মায়ের আগমনে আমরা অনেকটাই পুলকিত। ইতোমধ্যে আমাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। মণ্ডপে প্রতিমা আনা হয়েছে। সাজ শয্যার কাজ চলছে। এখন অপেক্ষা। আমরা পঞ্জিকার তিথি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পাড়া প্রতিবেশীসহ পূজা কমিটির সবাইকে সাথে নিয়ে মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করবো।
জেলা পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের সদস্য সচিব প্রবীর চৌধুরী রিপন বলেন, এবার জেলার ৯টি উপজেলায় ৫৭৮টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ বছর জেলার মধ্যে পৌরসভাসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় ৮০টি, নাসিরনগর উপজেলায় ১৩৯টি, সরাইল উপজেলায় ৫৩টি, কসবা উপজেলায় ৪৩টি, আখাউড়া উপজেলায় ২৪টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ১৫টি, বিজয়নগর উপজেলায় ৫৬টি, নবীনগর উপজেলায় ১২৭টি ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৪২টি পূজামণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিটি মণ্ডপকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। তিনি সবাইকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি যৌথ বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
উল্লেখ্য, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী দেবী দুর্গা এবার গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যে আগমন করবেন এবং দোলায় (পালকি) চড়ে ফিরে যাবেন। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২৮ সেপ্টেম্বর বোধনের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী পূজা পালন করে হবে। আগামী ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে হবে মূল আনুষ্ঠানিকতা।