শিরোনাম
ফরিদপুর, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশের পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব মোকাবিলা এবং পেঁয়াজের পচন রাধে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা এবং অভিযোজন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে।
ফরিদপুরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকার আয়োজনে এবং বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট (বিসিসিটি)-এর সহযোগিতায় ডিএই-এর সম্মেলন কক্ষে একটি বছরব্যাপী অভিযোজন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুরের ৬০ জন কৃষককে পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক কৌশল, বিশেষ করে এয়ার ফ্লো মেশিন ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে ২৭ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, যা তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা হবে। এই অর্থ দিয়ে কৃষকরা এয়ার ফ্লো মেশিন ক্রয় এবং পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ইটের দেয়াল নির্মাণ করতে পারবেন।
প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৪০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়, কিন্তু উপযুক্ত প্রযুক্তির অভাবে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়। আমাদের এই নতুন প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হলে পেঁয়াজের পচন ও অপচয় প্রায় শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও বলেন, এই প্রযুক্তি সংরক্ষণকালে পেঁয়াজের ওজন হ্রাস ৩০% পর্যন্ত কমাবে, যা কৃষকদের আর্থিক লাভের পাশাপাশি দেশের পেঁয়াজ আমদানিনির্ভরতা কমাবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই উদ্যোগের ফলে আমরা কেবল দেশের চাহিদা পূরণে সক্ষম হব না, বরং বিদেশেও পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারব। এই প্রকল্প দেশের ১৬ টি জেলায় তিন হাজার ৭০০ জন কৃষকের কাছে পৌঁছাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ডিএই-এর অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা এবং ডিডি মো. সাহাদুজ্জামান। এ সময় জেলা ও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষকরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, "সরকারের এই পদক্ষেপে আমরা খুব খুশি হইছি। এত টাকা দিয়া মেশিন কেনার কথা আমরা কোনোদিন ভাবি নাই। এইবার আমাদের পেঁয়াজ আর পচব না।
ফলনও ভালো হবে, টাকাও বেশি পাবো। এইডায় আমাদের জীবনযাত্রা অনেক সহজ কইরা দিব।" তাঁরা আরও বলেন, "এই প্রকল্পটা জলবায়ু পরিবর্তনের লগে লড়াই করার আর আমাদের গেরামের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য একখান বড় পদক্ষেপ।"