বাসস
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্যস্ত বাগেরহাটের নির্বাচন অফিস 

ছবি: বাসস

আজাদ রুহুল আমিন

বাগেরহাট, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলায় কর্মরত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ভোটার হতে নির্বাচন অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘ সময় ধরে যারা এলাকায় আসতে পারেন নি তাদের স্ব স্ব কর্মস্থল থেকে নিজ এলাকায় ভোটার স্থানান্তর  করছেন। ভোটারদের চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত নির্বাচন কর্মকর্তারা। তারা দক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে জনসাধারণকে সেবা দিচ্ছেন। 
‎‎
১৯৮৪ সালে বাগেরহাট মহকুমা থেকে জেলায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাগেরহাট জেলার বাসিন্দারা দোরগোড়ায় প্রশাসনিক সেবা পাচ্ছেন। বাগেরহাট জেলার ৩টি পৌরসভা ও ৯ টি উপজেলার ৭৫ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ লাখ ৯৯ হাজার ৩০৯।  এর মধ্যে মহিলা ভোটার ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৭, হিজড়া ভোটার ৯ ও পুরুষ ভোটার ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮৩। সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী এ জেলায় মহিলা ভোটারের তুলনায় পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৮ হাজার বেশি । জেলায় মোট সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ৫৮৬ টি।
‎‎
বাগেরহাট সদর উপজেলায় পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৯ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৫২। হিজড়া সম্প্রদায়ের ৩ ভোটারসহ সদর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৬৪ জন। 

কচুয়া উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৪৪ হাজার ৮৭০ ও মহিলা ভোটার ৪৫ হাজার ৩৪৯ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৯০ হাজার ২১৯ জন। আসন ভিত্তিক মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮৮৩। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৪৭ টি।

জেলার ফকিরহাট উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৬১ হাজার ৬২৫ ও মহিলা ৬২ হাজার ৭৬৫। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৯০। মোল্লাহাট উপজেলায় পুরুষ ৫৮ হাজার ৬৮৯ ও মহিলা ভোটার ৫৪ হাজার ৫১৭ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২০৬ জন। 

চিতলমারী উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৬২ হাজার ২৩৬ ও মহিলা ভোটার ৫৮ হাজার ৩৩৪ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৫৭১ জন। ৩ টি উপজেলা মিলে আসনভিত্তিক মোট ভোটার সংখ্যা হলো ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৭ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র হলো ১৬১টি।
‎‎‎‎
রামপাল উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৬৮ হাজার ৩৬৫ ও মহিলা ভোটার ৬৯ হাজার ২৫৪ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৯ জন। মোংলা উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৫৯ হাজার ৭৫৪ জন, হিজড়া ৩ জন  ও মহিলা ভোটার ৫৯ হাজার ৮১৭ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৭৪ জন। আসন ভিত্তিক মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৯৩ জন। উপজেলায় মোট সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১১৯ টি।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৫৯ জন, হিজড়া ২ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৮৭ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৪৮ জন। শরনখোলা উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৫০ হাজার ৮৭৬ জন ও মহিলা ভোটার ৫০ হাজার ২৪২ জন।  মোট ভোটার ১ লাখ ১১ হাজার ১৮ জন। আসন ভিত্তিক মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৬ জন। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৫৯ টি।
‎‎
নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকে বাগেরহাট জেলায় নির্বাচনের আমেজ বইতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা যেসব কর্মসূচি পালন করেন বা অনুষ্ঠানে যোগ দেন সেখানেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আলোচনা হয়। এছাড়া তরুণ ভোটার যারা তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন নি, তারা গভীর উৎসাহ নিয়ে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছেন। 

তরুণ ভোটার রুকাইয়া আমিন অরিন বাসসকে বলেন, সিল মারার দিন শেষ। ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে মনের মত প্রার্থীকে ভোট দেয়ার অপেক্ষায় আছি। 

সরেজমিনে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে দেখা যায়, নির্বাচন অফিসার রাহুল রায় তার চেম্বারে স্টাফদের ব্রিফিং করছেন। কোনো নাগরিক নির্বাচন অফিসে এসে যেন হয়রানির শিকার না হন সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন তিনি। নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।
‎‎
বাগেরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম বাসসকে বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহম্মদ ইউনুস ইতিহাসের সেরা, স্বচ্ছ ও সুন্দর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ.এম.এম. নাসির উদ্দিন ও নির্বাচন কমিশনাররা নিরলসভাবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, আমি এবং আমার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরলসভাবে কাজ করছি। আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। 

তিনি জানান, নির্বাচনের সকল তথ্য-উপাত্ত, ভোটার নিবন্ধন, ভোটার স্থানান্তর এবং সকল প্রকার জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে অনলাইন সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। এই (https://www.ecs.gov.bd) লিংকে সার্চ করলে ঘরে বসেই যে কোনো নাগরিক নির্বাচন সংক্রান্ত সব সেবা পেতে পারেন। 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অলিউল ইসলাম আরও বলেন, ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী গড়ে  ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এছাড়া প্রতি ৬০০ পুরুষ ভোটারের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ থাকবে এবং প্রতি ৫০০ নারী ভোটারের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ থাকবে। এছাড়া বেশি ভোটার হলে ভোটকেন্দ্র বাড়ানো হবে। 

তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলো মেরামতেরও সিদ্ধান্ত রয়েছে। এছাড়া  অতি জরুরি  নির্বাচনী কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজগুলো একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনী তপশীল ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত যারা বাদ পড়েছেন তারা  ভোটার হতে চাইলে নিবন্ধন করতে পারবেন।