শিরোনাম
ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকায় বিশ্ব অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট যুদ্ধের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ চীনা দূতাবাস এক সেমিনারের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তি রক্ষা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা প্রতিরোধে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
‘শেয়ার্ড মেমোরি অ্যান্ড কনটেম্পরারি মিশন: কমেমোরেটিং দ্য এইটিখ অ্যানিভার্সারি অব দ্য ভিক্টরি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ওয়ার’ শীর্ষক এ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক নেতা, গণমাধ্যম প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিক সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং বিশ্ব অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট যুদ্ধ ছিল মানব ইতিহাসের এক নজিরবিহীন সংগ্রাম, যা চূড়ান্তভাবে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি ছিল ন্যায়-অন্যায়ের, আলো-অন্ধকারের এবং অগ্রগতির সঙ্গে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির এক মহাজয়।’ তিনি বলেন, এশিয়ার মূল যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে চীন চূড়ান্ত বিজয়ে বিশাল অবদান রেখেছিল।
রাষ্ট্রদূত ইতিহাস স্মরণ, শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা এবং অর্জিত শান্তিকে লালন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি শান্তি, উন্নয়ন, ন্যায্যতা, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মতো সর্বজনীন মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান।
ইয়াও আরও বলেন, ইতিহাস বিকৃতি বা আগ্রাসনের মহিমা প্রচারের যেকোনো প্রয়াস রুখতে হবে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অর্জনগুলো রক্ষা করতে হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হবে।’
সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট যুদ্ধে চীনের আত্মত্যাগ ও ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তারা বলেন, শান্তি নিশ্চিতকরণ ও অতীতের ট্র্যাজেডি পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য ইতিহাসের সঠিক উপলব্ধি অপরিহার্য।
ড. চৌধুরী উল্লেখ করেন, যুদ্ধ-পরবর্তী আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ও বহুপক্ষীয় কাঠামো সংরক্ষণ করা জরুরি। অন্যদিকে রাষ্ট্রদূত জামান সেমিনারটিকে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন, এটি পারস্পরিক বোঝাপড়া জোরদার এবং বাংলাদেশ-চীন দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।
রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতারাও চীনের অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়ার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মো. শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং বাংলাদেশে চীনা এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি হান কুন শান্তি ও উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব পিসফুল রিইউনিফিকেশন অব চায়নার সহ-সভাপতি ইয়ে লিয়াং বিদেশে বসবাসরত চীনাদের অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট সংগ্রামে ভূমিকা স্মরণ করেন এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে অব্যাহত প্রচেষ্টার অঙ্গীকার করেন।
সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারীরা ‘দ্য গার্ডিয়ানস’ শীর্ষক একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও দেখেন, যেখানে চীনা সেনাদের সেবার কথা তুলে ধরা হয়।