বাসস
  ২২ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৫

খাগড়াছড়িতে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পারাপার, দুর্ভোগ

ছবি: বাসস

জীতেন বড়ুয়া

খাগড়াছড়ি, ২২ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): সড়ক সেতুর দুই ধারের দেয়াল ধসে গেছে, সরে গেছে মাটি। নিরুপায় হয়ে স্থানীয়রা বাঁশ আর কাঠের পাটাতন বসিয়ে দিয়েছেন সেতুর দুপাশের সংযোগ সড়কে। এর উপর দিয়েই ঝুঁকিপূর্ণভাবে ৩০ গ্রামের মানুষ পারাপার ও পণ্য আনা-নেওয়া করেন। এতে দুর্ভোগে পড়েন তারা। 

এছাড়া ভারী কোনো যান চলাচল করতে না পারায় বেশি কষ্ট পোহাতে হয় রোগী, শিশু, গর্ভবতী নারী ও বৃদ্ধদের। 

খাগড়াছড়ির মহালছড়ির কাপ্তাই পাড়া সড়ক সেতুর চিত্র এটি। এ সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন মুবাছড়ি ইউনিয়নবাসী এবং রাঙ্গামটির জেলার নানিয়ারচর উপজেলার করল্যাছড়ি, সেলোন্যা, সাবেক্ষংসহ ৩০ গ্রামের মানুষ। কোনো রকমে সেতু পারাপার হতে পারলেও কোনো পণ্য আনা-নেওয়া করা যায় না সেতু দিয়ে। তাই উপজেলা সদরের সঙ্গে মুবাছড়ি ইউনিয়নের একমাত্র সংযোগ সেতুটি দ্রুত পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, মহালছড়ি উপজেলার সিঙ্গিনালা সড়কের কাপ্তাই পাড়া সেতুটি জনগুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ ৫০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি মুবাছড়ি ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে উপজেলা সদরের। গত দুই বর্ষায় জরাজীর্ণ সেতুর দুইপাশের সংযোগ সড়কের ধারক দেয়াল ধসে গেছে। সেতুর নিচের প্লাস্টার খসে রড আর কংক্রিট বেরিয়ে গেছে। এই অবস্থায় সেতুতে উঠতে সংযোগ সড়কে কাঠের পাটাতন বসানো হয়েছে। এর উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন মুবাছড়ি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও রাঙ্গামটির জেলার নানিয়ারচর উপজেলার করল্যাছড়ি, সেলোন্যা, সাবেক্ষংসহ ৩০ গ্রামের মানুষ চলাচল ও পণ্য আনা-নেওয়া করেন।

এর মধ্যে একটি বাইপাস সড়ক তৈরি করলেও তা কাপ্তাই হৃদের পানিতে তা ডুবে গেছে। এখন কোনো রকম চলাচল ছাড়া পণ্য আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। 

চলাচলকারীরা বলেছেন, অটো আর মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোনো পরিবহন চলাচল করতে পারে না এ সেতু দিয়ে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিশেষ করে রোগীদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয়।  কাপ্তাই পাড়ার বাসিন্দা অসিত বরন চাকমা ও সুইলাপ্রু মারমা জানান, ৫০ বছর আগে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও মাঝে কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। গত ২ বারের টানা বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদের পানিতে সেতুর দুই ধার ধসে গেছে। এতে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুইতি কারবারী জানান, কাপ্তাই পাড়া সেতুটি এলাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় পারাপারে লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সেতুটি দ্রুত পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ির স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা জানান, গত দুই বছরের বন্যায় সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে পড়েছে। এটা অনেক পুরোনো একটি সেতু। বর্তমানে ব্রিজটি নির্মাণের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। কয়েক দিনের মধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।