বাসস
  ২১ আগস্ট ২০২৫, ১৭:০৯

রোহিঙ্গা নারীর পাসপোর্ট জালিয়াতি মামলায় ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকে’র অভিযোগপত্র

কক্সবাজার, ২১ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নারীকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতা করার অভিযোগে সাবেক দুই কাউন্সিলরসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দুদক-এর সহকারী পরিচালক তুষার আহমেদ (বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে কর্মরত) এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

অভিযোগপত্রে অভিযুক্তরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ রফিকুল ইসলাম, ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মিজানুর রহমান, নতুন বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা মো. হেলাল উদ্দিন বাদশা ও কক্সবাজার জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এএসআই সাজেদুর রহমান। 

তারা রোহিঙ্গা নারীকে ভুয়া কাগজপত্র সরবরাহ করে বাংলাদেশি নাগরিক পরিচয়ে পাসপোর্ট পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত।

২০১৭ সালের ৭ জুন ইয়াছমিন আক্তার নামে এক নারী কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে আবেদন করেন। তিনি মৃত মোহাম্মদ হোসেন ও নুর নাহার বেগমের কন্যা পরিচয় দেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ ও নাগরিকত্ব সনদ জমা দেন, যা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের দ্বারা সত্যায়িত হয়। 

তবে দুদক-এর তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, ওই নারী মূলত মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু এলাকার বাসিন্দা নুরুন্নাহার বেগম, যিনি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করতেন। 

তদন্তে বলা হয়েছে, সাবেক কাউন্সিলররা ভুয়া কাগজপত্রে সিল ও স্বাক্ষর দেন এবং স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বাদশা তাকে নিজের বোন পরিচয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তা সনদ সংগ্রহ করান। 

তৎকালীন এএসআই সাজেদুর রহমান পুলিশ প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করে সহযোগিতা করেন।

২০২১ সালের ২৫ মার্চ এ ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে বুধবার পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। 

তবে এতে কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাবেদ মোহাম্মদ কায়সার নোবেল এবং জেলা পুলিশের সাবেক পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র ধরকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।

দুদক-এর তদন্ত কর্মকর্তা তুষার আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ও নিরপেক্ষ তদন্তের পর পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অন্য দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায়, তাদেরকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। 

কক্সবাজার আদালতে দুদক-এর আইনজীবী আব্দুর রহিম জানান, অভিযোগপত্র আদালতে জমা হয়েছে, তবে পরবর্তী ধার্য তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।