বাসস
  ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৩:২২

শতাধিক মণ ‘টপলেডি’ বিক্রির প্রত্যাশা বদরুজ্জামানের

পেঁপের এই জাতটি ‘টপলেডি’ নামে পরিচিত। ছবি: বাসস

রোস্তম আলী মন্ডল

দিনাজপুর, ১৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বাগানে সারিবদ্ধ গাছে ঝুলছে ছোট বড় সবুজ রঙের অসংখ্য পেঁপে। আকর্ষণীয় এসব পেঁপে ‘টপলেডি’ নামে পরিচিত। এ পেঁপে শুধু বাগানের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করেনি, সবুজে মোড়ানো পেঁপেতে স্বপ্ন দেখছেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার যুবক মো. বদরুজ্জামান (৩৮)। মৌসুমে শতাধিক মণ পেঁপে বিক্রির প্রত্যাশা করছেন সফল এ উদ্যোক্তা।

বুধবার উপজেলার রবিপুর গ্রামের মো. বদরউদ্দীনের ছেলে সফল কৃষি উদ্যোক্তা বদরুজ্জামানের সঙ্গে কথা হয় তার পেঁপে বাগানে গিয়ে। 

তিনি জানান, চলতি বছরের মে মাসে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ২০ শতক জমিতে উন্নত ফলনশীল টপলেডি পেঁপের চারা রোপণ করেছেন। মাত্র ৩ মাসেই চারাগুলো ৩ থেকে ৪ ফুট বেড়ে গেছে। গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত পেঁপেতে ভরে গেছে গাছগুলো। পেঁপে ধরার দৃশ্য দেখে তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন। সম্ভাবনা দেখে, তিনি আরও ৭০ শতক জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেছেন।

বদরুজ্জামান বলেন, এবার প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে কৃষি বিভাগের সরবরাহ করা চারায় টপলেডি পেঁপে চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে প্রথম বছরেই ফলন ভালো হয়েছে। বাগান থেকে পাইকাররা প্রতিকেজি পেঁপে ২০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বাগান থেকে প্রায় ৩০ মণ কাঁচা পেঁপে ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আগামী ৬ মাস পেঁপের ফলন থাকবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাগানে আরও ৩০ মণ পেঁপে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। মৌসুমজুড়ে বাগান থেকে শতাধিক মণ পেঁপে বাজারজাত করে লাখের বেশি টাকা আয় করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করছি। 

তিনি জানান, তার নতুন বাগানের পেঁপে চারাগুলোও বেড়ে ওঠতে শুরু করেছে। তিনি নিজে ও শ্রমিক দিয়ে চারাগুলোর পরিচর্যা করছেন। আগের ২০ শতক জমির পেঁপের ফলন শেষ হওয়ার পর, নতুন বাগানের পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন। এভাবে সারাবছর তার দুটি বাগান থেকে পেঁপে বাজারজাত করতে পারবেন। এ লক্ষ্য নিয়ে তিনি পেঁপে চাষে এগিয়ে যাচ্ছেন।

উদ্যোক্তা বদরুজ্জামান জানান, অন্য ফসলের তুলনায় পেঁপে চাষে খরচও তুলনামূলক কম। এলাকার অনেক কৃষক ও তরুণরা তার পেঁপে বাগান দেখতে আসেন। তাদেরও পেঁপে চাষে উদ্বুদ্ধ ও সহযোগিতা করছেন তিনি। বিরল উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পেঁপে চাষে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি। আগামীতে আরও বেশি জমিতে পেঁপের বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

উপজেলার ফারাক্কা বাঁধ গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পেঁপের বাগান তৈরি এখন শুধু বদরুজ্জামানের নয়, পুরো এলাকার কৃষক ও বেকার যুবকদের কাছে সম্ভাবনার হয়ে উঠছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি হিসেবে পেঁপের চাহিদা বছরজুড়ে। পেঁপে চাষে সার ও কীটনাশকের খরচও কম হয়।

বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, কৃষকদের আমরা একটি প্রকল্পের আওতায় পেঁপে চাষে কারিগরিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। এতে উন্নত ফলনশীল টপলেডি পেঁপে চাষে যুবক-কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এভাবে কৃষির প্রতি আগ্রহী তরুণরা নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষ ও উৎপাদনে ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবেন।