শিরোনাম
।। মুহাম্মদ নূরুজ্জামান।।
খুলনা, ৯ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : জেলার রুপসা উপজেলায় এক ক্ষেতে ৪ ফসল ফলিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। স্বল্প জীবনকাল হওয়ায় এক জমিতে বছরে ৩ বার ধান এবং একবার সরিষা চাষ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ব্রি ধান-৯৮ এর নমুনা শস্য আউশ ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক। সোনালি ফসলে ঝিকমিক করছে রুপসার বিল।
রোদ-বৃষ্টি ও রোগ বালাই উপেক্ষা করে কৃষকরা এসব বিলে চার ফসল ফলাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, রূপসায় মোট ৩৫ হেক্টর(২৬২.৫ বিঘা) জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি ধান ৪৮, ব্রি ধান ৯৮, ব্রি ধান ১০৬, বিনা ধান ১৯ এবং বিনা ধান ২১। অধিকাংশ জাতের জীবনকাল ১১০ দিন থেকে ১১৫ দিন। স্বল্প জীবনকাল হওয়ায় এক জমিতে বছরে ৩ বার ধান এবং একবার সরিষা ফলিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের সামন্তসেনা বিল, টিএসবি ইউনিয়নের স্বল্প বাহিরদিয়া বিল, শ্রীফলতলা ইউনিয়নের শ্রীফলতলা বিল ও আইচগাতী ইউনিয়নের আইচগাতী বিলে আউশ ধানের চাষ হয়। ধানের ভালো ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জানা যায়, আউশ’ শব্দের অর্থ আগাম। ৮০ থেকে ১২০ দিনের ভেতর ধান পেকে যায় বলে একে ‘আউশ’ নামে ডাকা হয়। চৈত্র-বৈশাখে বুনে আষাঢ়-শ্রাবণে কাটা হয়।
কৃষকরা কৃষি অফিসের যথাযথ পরামর্শ মেনে চাষাবাদ করেন। বর্তমানে রূপসা উপজেলার বিলগুলোতে আউশ ধান কাটা শুরু হয়েছে।
সামন্তসেনা গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম বাসসকে জানান, ইতোমধ্যেই তিনি ব্রি ধান ৯৮ নমুনা শস্য আউশ ধান কাটা শুরু করেছেন। তিনি একই জমিতে রবি মৌসুমে বোরো ধানের আবাদ করার পর খরিপ-১ মৌসুমে ব্রি ধান- ৯৮ জাত চাষ করেছেন। আউশের স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন হওয়ায় আগাম ধান ঘরে তুলতে পারছেন। আউশ ধান কাটার পর জমিতে আবার আমন ধান চাষ করবেন বলে তিনি জানান। এভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী আবাদ করলে এক জমিতে ৩ থেকে ৪টি ফসল চাষ করে ঘরে তোলা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তরুণ কুমার বালা জানান, রুপসায় ২৫০ জন কৃষক ২৬২.৫ বিঘা জমিতে আউশ আবাদ করেছেন। তাদের আবাদকৃত এসব জমি থেকে ১৪০ মে.টন আউশ ধান উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চাষি রেজাউল করিম ব্রি ধান ৯৮ এর কর্তন শুরু করেছেন। তার নমুনা শস্য ক্ষেত থেকে বিঘা প্রতি ১৩ মন করে ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩ হেক্টর বেশি জমিসহ মোট ৩৫ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। তাদের আমন ধানের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধানের ফলন বেশি ও দাম ভালো পাওয়ায় অন্য কৃষকরাও আউশ ধান চাষের প্রতি আগ্রহী হবে বলে তিনি মনে করেন।