বাসস
  ৩০ জুলাই ২০২৫, ২০:৪৮

সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ

নির্বাচন কমিশন ভবন। ছবি : বাসস

ঢাকা, ৩০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে ৩০০ আসনে ছোট খাটো পরিবর্তনের প্রস্তাব করে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ইসির ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। 

বিজ্ঞপিতে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এর দফা (১) এর উপ-দফা (গ) এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১ এর ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১)(খ) অনুযায়ী জাতীয় সংসদ-সদস্যের নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এলাকা ভিত্তিক নির্বাচনি এলাকাসমূহের সীমানা উপরোক্ত আইনের ধারা ৬ এর উপ-ধারা (২) অনুসারে প্রশাসনিক সুবিধা, আঞ্চলিক অখন্ডতা এবং জনসংখ্যার বাস্তব বিভাজনকে যতদূর সম্ভব বিবেচনায় রেখে প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে ধারা ৬ এর উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন এতদসংগে একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করছে এবং তালিকাটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দাদের নিকট হইতে লিখিত দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহবান করছে।’

সীমানা পুনঃনির্ধারণে নিম্মোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছেঃ পার্বত্য এলাকার ৩ (তিন) জেলার ৩টি আসন অপরিবর্তনীয় রাখা। ২ আসন বিশিষ্ট জেলার আসন সংখ্যা অপরিবর্তীত রাখা। কারণ ভোটার/জনসংখ্যার অনুপাতে আসন বৃদ্ধি করলে অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস (জেলাভিত্তিক ভোটারের জাতীয় গড়ের তুলনায়) পায়। আবার ২টি আসন-কে ১টি আসনে হ্রাস করলে ভোটার সংখ্যা গড়ের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়। 

তিন আসন বিশিষ্ট জেলার আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা। আসন হাস/বৃদ্ধিতে ভোটার/জনসংখ্যার অনুপাতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে পড়ে। যেসকল আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের জন্য কোন আবেদন দাখিল হয়নি সে আসনগুলো অপরিবর্তীত রাখা।

প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার গণ্য করে উপজেলা/থানা ইউনিটকে যতদূর সম্ভব অখণ্ড রাখা। জেলার মধ্যকার আসনের ভোটার সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। যতদূর সম্ভব, প্রশাসনিক ও নির্বাচনি সুব্যবস্থার বিষয় বিবেচনায় রেখে উপজেলা, সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডের অখন্ডতা বজায় রাখা। ইউনিয়ন, সিটি কপোরেশনের ওয়ার্ড ও পৌরসভার একাধিক সংসদীয় আসনের মধ্যে বিভাজন না করা।

সিটি কর্পোরেশন এলাকার জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, প্রশাসনিক পরিধি বিবেচনায় নির্বাচনি এলাকা পুনঃবিন্যাস করা। যতদূর সম্ভব, সীমানা পুনঃনির্ধারণকালে সংশ্লিষ্ট জনগণের সেবা বিষয়ক সুবিধা/অসুবিধার বিষয় বিবেচনা করা।
যতদূর সম্ভব, ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য (যথা-নদী) ও যোগাযোগ ব্যবস্থা (যথা-রাস্তাঘাট) তথা জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনা করা; এবং যেসকল প্রশাসনিক এলাকা নতুন সৃষ্টি হয়েছে বা সম্প্রসারণ হয়েছে বা বিলুপ্ত হয়েছে তা অন্তর্ভুক্ত/কর্তন করা এবং পরিবর্তিত নাম সংশোধন করা।

কোন সংক্ষুদ্ধ বা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আগামী ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ / ১০ আগস্ট ২০২৫ তারিখের মধ্যে কোন আসনের পুনঃনির্ধারিত নির্বাচনি এলাকার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর তার লিখিত দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পেশ করতে পারবেন। তবে দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত এই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত কোন আসনের সীমানা সংক্রান্ত হতে হবে এবং দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত সংক্রান্ত দরখাস্ত ৫(পাঁচ) প্রস্থ দাখিল করিতে হইবে। নির্ধারিত তারিখের পর কোন দাবী/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত সংক্রান্ত দরখাস্ত গ্রহণ করা হবে না।

এর আগে বুধবার বিকেলে সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুননির্ধারণের খসড়া নির্বাচন কমিশন অনুমোদন দিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি জানান, ৪২ টি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে কারিগরী কমিটি। এর মধ্যে ৩৯ টি আসনে সীমানা সামান্য পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে ইসি। এছাড়া আড়াইশ’ আসনের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি আবেদন না আসায় বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান। আর সবচেয়ে বেশি যে আসনে ভোটার সেখানে একটি আসন বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেছে কারিগরি কমিটি। এছাড়া সবচেয়ে কম ভোটার যে আসনে, সেখান থেকে একটি আসন কমানোর বিষয়ে প্রস্তাব করেছে কমিটি। এক্ষেত্রে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানোর এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানোরও প্রস্তাব রয়েছে বলে তিনি জানান।