শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষা হচ্ছে বৈষম্য দূরীকরণের হাতিয়ার। সাম্যভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
স্কুলের পাঠ্য বই সংশোধনে অবদান রাখায় ২৬৭ জন শিক্ষককে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখিত পত্রে এভাবেই শিক্ষা সম্পর্কে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের মৌলিক ভিত্তি। একটি সঠিক, যুগোপযোগী ও শিক্ষাবান্ধব পাঠ্যপুস্তক শুধু শিক্ষার মানোন্নয়নে নয়, একটি প্রগতিশীল সমাজ গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ইতোমধ্যে ১৫৫ শিক্ষককে লিখিত চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বাকিদেরকে পর্যায়ক্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. এ কে এম তাজকির-উজ-জামান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)কে জানান, বর্তমান উপদেষ্টা গত চার মাস আগে যখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন তখন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আসতে থাকে যে এনসিটিবির পাঠ্য বইয়ের ব্যাপক ভুল পরিলক্ষিত হচ্ছে। তখন উপদেষ্টা এনসিটিবির সাথে কয়েকটি বৈঠক করেন। এরপর শুরু হয় এনসিটিপি কর্তৃক প্রণীত পাঠ্য বইয়ের ভুল সংশোধন প্রক্রিয়া।
তিনটি ধাপে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের যারা অভিজ্ঞ শিক্ষক আছেন তাদের কাছ থেকে অনলাইনে সাজেশন নেওয়া হয় ভুল সংশোধনের জন্য। দ্বিতীয় ধাপে ঢাকার বাইরে থেকে শতাধিক শিক্ষককে ঢাকায় নিয়ে এসে নয়টা পাঁচটা অফিস টাইম এর মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে সরাসরি এনসিটিবি অফিসে এনে পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধন করানো হয়। তৃতীয় ধাপেও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঠ্য বইয়ের সর্বশেষ ভুল সংশোধন করে নেওয়া হয়।
এসব প্রক্রিয়ায় যে সকল শিক্ষক সম্পৃক্ত ছিলেন তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানানোর জন্যই শিক্ষা উপদেষ্টার এমন উদ্যোগ বলে জানান উপসচিব ড. এ কে এম তাজকির-উজ- জামান।
উপসচিব বলেন, এই চিঠি হয়তো শিক্ষকদের আর্থিক কোন উপকারে আসবে না। কিন্তু এটি একটি সম্মানীয় পত্র হিসেবে তাদের কাজের স্বীকৃতির উপযুক্ত প্রমাণ।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা তাঁর লিখিত বার্তায় বলেছেন, ‘পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের মৌলিক ভিত্তি। একটি সঠিক, যুগোপযোগী ও শিক্ষাবান্ধর পাঠ্যপুস্তক শুধু শিক্ষার মানোন্নয়নে নয়, একটি প্রগতিশীল সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই প্রেক্ষাপটে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর যথার্থতা, ভাষার স্পষ্টতা ও উপস্থাপনগত মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’
উপদেষ্টা বলেন, শুধুমাত্র এনসিটিবির নিজস্ব জনবলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সারা দেশে আপনাদের এই কাজে যুক্ত করা হয়। শিক্ষকবৃন্দ হলেন শিক্ষার সবচেয়ে বড় অংশীজন। সারাদেশের বৃহৎ অংশীজনে সুচিন্তিত মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে অনলাইনে ই-মেইল এর মাধ্যমেও তথ্য প্রদানের সুযোগ রাখা হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টা লিখিত বার্তায় আরো বলেন, আপনাদের এই অবিরাম প্রয়াসকে আমি একটি 'জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে শিক্ষক নেতৃত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত' হিসেবে বিবেচনা করি। আশা করি, ভবিষ্যতেও আপনারা এই মহৎ প্রয়াসে আমাদের পাশে থাকবেন এবং যুগোপযোগী, শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে গঠনমূলক অবদান রাখবেন।
শিক্ষকদের এ অবদান জাতি চিরদিন স্মরণে রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।