শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার আলোকে বৈষম্যহীন ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদান নিয়ে ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ : কালের সাক্ষী বিএমইউ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদ্যাপন স্টিয়ারিং কমিটি সদস্য ডা. মো. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডকুমেন্টারি ও চিত্রপ্রদর্শনী কমিটির সভাপতি ও বিএমইউর ডিন ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্ত।
বিএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চিফ এস্টেট অফিসার ডা. মো. এহতেশামুল হক তুহিন, শহীদ ডা. সজীব সরকারের বাবা মো. হালিম সরকার, বিএমইউর সহকারী প্রক্টর ডা. মো. আদনান হাসান মাসুদ ও নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট রাশিদা বেগম।
সভায় ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে চিকিৎসক সমাজের অসামান্য অবদান রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিভিন্ন বাধার মুখেও চিকিৎসকরা আহতদের সেবা দিয়েছেন, সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সফল করে তুলেছেন।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আহতদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। তাদের পুনবার্সন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আহতরা যাতে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পান সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১২ হাজার কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৭৫ জন বিদেশ থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন, বর্তমানে ৪০ জন বিদেশে চিকিৎসাধীন আছেন এবং আগামীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য আরো কয়েক জনকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, বিগত সময়ে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই নানাভাবে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। এমনও হয়েছে শিক্ষক এর সামনে দিয়ে তারই ছাত্র পদোন্নতি নিয়েছে।
তিনি বলেন, আবার বিগত সময়ে কোনো কোনো চিকিৎসক জুলাই বিপ্লবে আহত রোগীদের সেবা না দিয়ে চিকিৎসা পেশাকেই কলঙ্কিত করেছে। কেউ কেউ আবার লাঠিয়াল বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান সত্যিই অসাধারণ। এতে সর্বস্তরের শ্রেণীপেশার মানুষ অংশ নিয়েছে বলে এই আন্দোলন-গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে এমনভাবে গড়তে হবে যাতে রোগীরা এসে উন্নত চিকিৎসা পায় এবং রোগীরাই যেন বলে তাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নাই।
তিনি আরও বলেন, নার্সদের সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে রোগীরা যেন বলে ফিলিপাইনের নার্সদের মতো সেবা পেয়েছি। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হবেন অনেক বেশি মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মা শান্তি পাবে।
কোরান তেলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং এসময় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফেরাত ও আহতের দ্রুত সুস্থতা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের সম্পূর্ণ সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদের স্মরণে এবং মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।