বাসস
  ২৩ জুলাই ২০২৫, ১২:১৯

তিন জেলায় অভিযানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও জরিমানা আদায়

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অসংখ্য অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ছবি: পিআইডি

ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অসংখ্য অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পাশপাশি বিপুল পরিমাণ জরিমানাও আদায় করা হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে এ অভিযান চলে।

ঢাকার ডেমরা এলাকার ঠুলঠুলিয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকারের তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় তিনটি বাণিজ্যিক ওয়াশিং ফ্যাক্টরি — ‘শ্রাবণ ওয়াশিং’, ‘ব্রাদার্স ওয়াশিং’ ও ‘নিউ কালার ওয়াশিং’ থেকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় 'নিউ কালার ওয়াশিং' কে ১ লাখ টাকা এবং 'নিউ জিন্স ওয়াশিং' (আবাসিক সংযোগ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার) কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৩ হাজার ৩শ’ সিএফটি/ঘণ্টা লোড বিচ্ছিন্ন করা হয়। 

অভিযানে ২০টি সম্পূর্ণ অবৈধ আবাসিক সংযোগ এবং বকেয়ার থাকায় এক গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ছাড়া প্রায় ৭৫০ ফুট বিভিন্ন ব্যাসের জিআই ও এমএস পাইপ, ১১টি আবাসিক রেগুলেটর, ২টি কম্প্রেসার, ২টি চুলা, ৪টি পাইপ বার্নার ও ১শ’ ফুট হোস পাইপ জব্দ করা হয়। অভিযান শেষে সর্বমোট দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিজা খাতুনের নেতৃত্বে আরেকটি অভিযান পরিচালিত হয়। সেসময় মোহাম্মদনগর এলাকার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ‘শাহজালাল মেটাল’ নামক একটি খানাডুলি কারখানায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহার চিহ্নিত করা হয়। সেখানে ২টি চেম্বারে ৭৫০ সিএফটি ক্ষমতায় অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছিল। 

অভিযানে কারখানা থেকে ১০ ফুট ৩/৪” জিআই পাইপ, ৩০ ফুট পিভিসি পাইপ, একটি বুস্টার, ১০ ফিট হুইজ পাইপ এবং ২টি পাইপ বার্নার জব্দ করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে কারখানার মালিক মো. নুরুল হকের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং অবৈধ সংযোগটি সম্পূর্ণভাবে কিলিং করা হয়।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার জাঙ্গাল ও বারপাড়া এলাকায় সিনিয়র সহকারী সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। প্রায় ১ হাজার অবৈধ চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়, যা প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত ছিল। 

অভিযানে ২৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের ২" ও ৩" ব্যাসের এমএস পাইপ এবং ৩/৪" জিআই/এমএস পাইপ, ২৪টি রেগুলেটর ও ৬টি লকউইং কক জব্দ করা হয়। অবৈধ বিতরণ লাইনের মূল উৎসে স্থাপিত ২" ও ৩" পাইপ স্থায়ীভাবে কিলিং করে দেওয়া হয়।

কুমিল্লার গৌরীপুর, পশ্চিম নোয়াগাঁও, জিয়ারকান্দি এবং বাতাকান্দি এলাকায় সিনিয়র সহকারী সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হানের নেতৃত্বে পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ৩টি মামলা দায়ের এবং মোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। 

অভিযানে ৬০ ফুট ১" এমএস পাইপ উচ্ছেদ করে ৪টি অবৈধ আবাসিক সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ গ্যাস ব্যবহারের দায়ে দ’জনের গ্যাস লাইন ও একটি আইডল রাইজার কেটে ফেলা হয়। মো. আ. মালেক সরকারকে আবাসিক সংযোগ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং মো. ফারুক সরকার ও পলি আক্তারকে যথাক্রমে ১০ হাজার ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সরকার অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও অননুমোদিত গ্যাস ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এই ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে এবং অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব পদক্ষেপ দেশের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং বৈধ গ্রাহকদের কাছে সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।