বাসস
  ১২ জুলাই ২০২৫, ২১:০৩

খুলনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে জামায়াতের মতবিনিময়

ছবি : বাসস

খুলনা, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ, মতবিনিময় ও দোয়া অনুষ্ঠান করেছে খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামী। শনিবার নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদেরকে নিয়ে এখন পর্যন্ত কারো ভাবনা চোখে পড়েনি। একমাত্র আমীরে জামায়াতের নির্দেশে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে এবং আহতদের খুঁজে-খুঁজে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর সাক্ষী উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী ভাই-বোনেরা।

তিনি আরও বলেন, আমীরে জামায়াত বলেছেন, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০-সহ আমাদের সকল আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। ২০২৪ এর ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। এজন্য শহীদদের স্মরণে ১০ খণ্ডে ২৫০০ পৃষ্ঠার বই প্রকাশ করা হয়েছে। এই বইতে শহীদদের পরিচয়, গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা ও শহীদ হওয়ার ঘটনা এবং স্থান সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দিবে না জামায়াতে ইসলামী।

তিনি উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন বাংলাদেশ আপনাদের। আপনারাই গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিবাহী সময়ে আগামী ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ জাতীয়ভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার পর গণঅভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে। আসন্ন জাতীয় সমাবেশ সফল করতে তিনি সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

মহানগরী আমীর বলেন, জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ৭ দফা আদায়ের মাধ্যমেই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সফলতা অর্জন করতে হবে। জামায়াতের ৭ দফা দাবি হলো-সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার,  জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ।

মহানগর জামায়াত আমীর আরও বলেন, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গিয়ে আহত-পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তারা ইসলামের দৃষ্টিতে গাজী এবং গণহত্যার শিকার সকলে শহীদ। আমাদের শহীদেরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার যেই স্বপ্ন দেখেছে, সেই স্বপ্নের বীজ জামায়াতে ইসলামী তার প্রতিষ্ঠাকালেই বুনেছে। জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘকাল ধরে সেই আন্দোলনই করে আসছে। জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন সঠিক ছিল এদেশের ছাত্র-জনতা ২০২৪-এ বুঝতে পেরেছে। এজন্য তারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশকে ভালোবেসে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছে। শহীদদের স্বপ্ন পূরণে জামায়াতে ইসলামী আগামীতেও কাজ করবে। তিনি উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম, অফিস সেক্রেটারি মীম মিরাজ হোসাইন, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা থানা সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান নাঈম, জামায়াত নেতা মো. মশিউর রহমান রমজান, শহীদ সাকিব রায়হানের গর্বিত পিতা মো. আজিজুর রহমান, আহত মো. সিরাজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম উজ্জল, এস এ মুকুল প্রমুখ।