শিরোনাম
ঢাকা ২৪ জুন, ২০২৫ (বাসস) : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক বলেছেন, বাংলাদেশের মত দুর্যোগপ্রবণ দেশে আগাম সতর্কবার্তা শুধুই একটি তথ্যই নয়, এটি জীবন রক্ষার অন্যতম উপায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এর সফল প্রয়োগও করেছে। ১৯৭০ সালে এক রাতে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যুকে এক অংকে বা শূন্যে নামিয়ে আনতে পেরেছি। আমাদের ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’ বিশ্বের আদর্শ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বিএম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ‘সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কীকরণ’ জাতীয় ভ্যালিডেশন ও শেয়ারিং কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নানাবিধ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে আমাদের আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থাকে আধুনিক করার পাশাপাশি বহুমাত্রিক দুর্যোগকে বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই আমরা থেমে থাকিনি। আমরা ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সাথে সাথে ভূমিধস, বজ্রপাত, খরা, তাপ প্রবাহ, শৈত্য প্রবাহ, এমনকি নগরভিত্তিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তাকেও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি।
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, সকলের জন্য আগাম সতর্কবার্তা বাস্তবায়নে সরকার ইতোমধ্যেই নিজস্ব অর্থের সংস্থান করছে। সরকার এই খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যেই এটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছি। তবে এটি সরকারের একার কাজ নয়, সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন হবে। এজন্য আমাদের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহায়তা, মাল্টি-ইয়ার কমিটমেন্ট, রিস্ক পুলিং ও ইনোভেটিভ ফাইন্যান্সিং মডেল।
তিনি বলেন, প্রযুক্তি থাকলেও যদি তা মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারে, তবে তার উপযোগিতা কমে যায়। তাই আমরা কমিউনিটির অংশগ্রহণ, স্বচ্ছ তথ্য প্রবাহ এবং সহজবোধ্য ও স্থানীয় ভাষায় বার্তা ডিজাইন ও বিতরণের ওপর জোর দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য, শুধু তথ্য সরবরাহ নয়, সেটি বুঝে গ্রহণ করে সাড়াদানের সক্ষমতা গড়ে তোলা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ সহনশীলতা নিয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে ক্রমাগত গুরুত্ব আরোপ, বিনিয়োগ এবং পরিকল্পনার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ‘সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কীকরণ’ গ্লোবাল উদ্যোগে সম্মিলিতভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সকলের জন্য আগাম সতর্কবার্তা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই রোডম্যাপ জাতীয় পরিকল্পনার (যেমন- এনপিডিএম, এনএপি) সাথে সঙ্গতি রেখে তৈরি করা হয়েছে। আজকের কর্মশালার মাধ্যমে আমরা এই যাত্রাকে আরও গভীর, বাস্তবভিত্তিক ও মানবকেন্দ্রিক করতে চাই। আমরা চাই, সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা শুধু একটি প্রতিশ্রুতি নয়, একটি বাস্তবতা হয়ে উঠুক।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস, সুইডিশ দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মারিয়া স্ট্রিডসম্যান এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।