বাসস
  ১৭ জুন ২০২৫, ১৩:০২

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

ঢাকা, ১৭ জুন, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

এনটিআরসিএ তাদের ওয়েবসাইটে নতুন এই গণবিজ্ঞপ্তি গতকাল প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট ১ লাখ ৮২২টি এমপিওভুক্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজে ৪৬ হাজার ২১১টি, মাদ্রাসায় ৫৩ হাজার ৫০১টি, এবং কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১১০টি পদসহ মোট ১ লাখ ৮২২ টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।

এ লক্ষ্যে আবেদন আহ্বান করে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলো এনটিআরসিএ।  আগামী ২২ জুন থেকে শুরু হবে আবেদন, চলবে ১০ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত। আবেদন ফি জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।

আবেদনের যোগ্যতা নির্ধারণে বলা হয়েছে, প্রার্থীর বয়সসীমা ৪ জুন ২০২৫ তারিখে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর হতে হবে, কারণ ঐ দিনই ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি, নিবন্ধন সনদের মেয়াদ ফল প্রকাশের তারিখ (৪ জুন ২০২৫) থেকে তিন বছরের মধ্যে থাকতে হবে। বয়স ও সনদের মেয়াদের শর্ত পূরণ না করলে প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন না।

আবেদনকারীরা এনটিআরসিএ ও টেলিটকের নির্ধারিত ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা। ফি জমা না দিলে আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রতিটি প্রার্থী সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পছন্দক্রম অনুযায়ী বেছে নিতে পারবেন। তবে পছন্দক্রমের বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আগ্রহ থাকলে সেই অপশনও রাখা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীকে নিয়োগপত্র না দেয়, তবে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধানের এমপিও স্থগিত বা বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডিও বাতিল করা হতে পারে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কিছু শর্তে অনলাইনে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। মোট ১ লাখ ৮২২টি শূন্যপদের তালিকা ও আবেদন ফরম ২২ জুন দুপুর ১২টায় এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইট (www.ntrca.gov.bd) ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইট (http://ntrca.teletalk.com.bd) এ প্রকাশ করা হবে। ওই দিন প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই অনলাইনে আবেদন করা যাবে।

আবেদনকারীর অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়, পদ ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী বৈধ নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে। তাকে এনটিআরসিএ প্রকাশিত সম্মিলিত মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী সনদপ্রাপ্ত হতে হবে। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতাও থাকতে হবে।

এ নিয়োগে নারী কোটার কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করেন এবং সে ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য সুপারিশ পান, তাহলে ওই সুপারিশ বাতিল করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রত্যেক আবেদনকারী ভিন্ন ভিন্ন নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একাধিক নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত হলেও, একই পর্যায়ের জন্য আবেদন করার সময় কেবল একটি সনদ ব্যবহার করতে পারবেন। যেই নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে আবেদন করবেন, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার সময় ব্যবহৃত ছবিটি ডাউনলোড করে আবেদন ফরমের নির্ধারিত স্থানে আপলোড করতে হবে। অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও ফি জমা দেওয়ার বিস্তারিত নিয়মাবলি টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইট (http://ntrca.teletalk.com.bd)-এ আলাদাভাবে দেওয়া রয়েছে। আবেদনপত্র পূরণের সময়েই পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। এটি পূরণ না করলে আবেদনপত্রটি বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।

বর্তমানে ইনডেক্সধারী (এমপিওভুক্ত) কর্মরত শিক্ষকরা যে পদে কর্মরত আছেন, সেই একই পদে আবার আবেদন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে, যদি তাদের কাছে এনটিআরসিএ থেকে অন্য কোনো উচ্চতর বা নিম্নতর পদের জন্য প্রত্যয়নপত্র থাকে, তাহলে তারা সেই ভিন্ন পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা, ২০২১-এর পরিশিষ্ট ‘ঘ’-এর ২৪ নম্বর ক্রম অনুযায়ী, বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজে সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদে কেবল মহিলা প্রার্থীরাই আবেদন করতে পারবেন। কোনো পুরুষ প্রার্থী মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই পদে আবেদন করে নিয়োগের সুপারিশ পেলে, তা বাতিল বলে গণ্য হবে।

একই নীতিমালার ২১ নম্বর ক্রম অনুযায়ী, সহকারী শিক্ষক (ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা) পদে আবেদনকারীকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ধর্মের অনুসারী হতে হবে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করলে এবং পরে নিয়োগের সুপারিশ পেলে, সেটিও বাতিল করা হবে।

আবেদন ফরম পূরণের সময় প্রার্থীকে অবশ্যই নিজের মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানা দিতে হবে।
আবেদন ফরমটি (e-Application)পূরণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ফরম পূরণ শেষে একবার আবেদনপত্র ঝঁনসরঃ হয়ে গেলে তা কোন ভাবেই সংশোধনের সুযোগ থাকবে না।

সব আবেদনকারীকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে অনলাইনে সফলভাবে আবেদন সম্পন্ন করার পর, নিজ উদ্যোগে আবেদনের একটি প্রিন্ট কপি (Applicant's copy)সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হবে।

আগামী ২২ জুন দুপুর ১২টা থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও আবেদন ফি জমার কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবেদনকারীদের শেষ সময় পর্যন্তত্ম অপেক্ষা না করে আবেদন ফরম পূরণের পর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফি পরিশোধ করতে হবে। আবেদন ফি জমার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত।

তবে যারা শেষ মুহূর্তে আবেদন করবেন এবং সময়মতো ফি জমা দিতে ব্যর্থ হবেন, তারা আগামী ১৩ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত টেলিটকের নির্ধারিত পদ্ধতিতে এসএমএসের মাধ্যমে ফি পরিশোধের সুযোগ পাবেন। এজন্য আবেদনকারীদের আগে থেকেই প্রাপ্ত ইউজার আইডি ব্যবহার করতে হবে।

প্রাপ্ত আবেদনসমূহ থেকে প্রতিটি শূন্যপদে প্রার্থীদের পছন্দ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে একজন করে প্রার্থী নির্বাচিত করা হবে। নির্বাচিত প্রার্থীর তথ্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জানানো হবে।

শূন্যপদের চাহিদা প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে উপজেলা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে সংগৃহীত হয়। তাই ভুল চাহিদাজনিত কোনো সমস্যার জন্য নিয়োগ সুপারিশে এনটিআরসিএ দায়ী থাকবে না।

যদি মামলা বা আইনগত কোনো জটিলতার কারণে অনলাইনে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কোনো পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে সেটির দায়ভার এনটিআরসিএ নিতে পারবে না।

এছাড়া, এনটিআরসিএ এই গণবিজ্ঞপ্তির সকল শর্ত ও প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির যেকোনো সময় সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্তন বা স্থগিত করার অধিকার সংরক্ষণ করে রেখেছে।

যুগ্ম সচিব মো. শাহাদাত হোসেন, সদস্য (শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান) স্বাক্ষরিত এই গণবিজ্ঞপ্তি এনটিআরসিএ’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।