বাসস
  ০৫ জুন ২০২৫, ১০:৩৭

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ পরিবেশ সংরক্ষণ আমাদের একান্ত কর্তব্য : তারেক রহমান

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: বাসস

ঢাকা, ৫ জুন, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ পরিবেশ সংরক্ষণ করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। আজ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সচেতনতা এবং পদক্ষেপ গ্রহণকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও এবার দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

তারেক রহমান তার ভেরিফাইড ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন অর্থবহ প্রোগ্রাম এবং ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ পালন করছে। এমন এক সময়ে যখন বেপরোয়া শিল্পায়ন এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন অনুশীলনগুলো বিশ্বজুড়ে বাস্তুতন্ত্রকে হুমকির সম্মুখীন করে চলেছে, এই দিনটি পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই জীবনধারণের জরুরি প্রয়োজন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ভৌগোলিক ভাবে বাংলাদেশ অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পরিবেশগত বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সমৃদ্ধ পরিবেশ সংরক্ষণ করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই বিএনপি পরিবেশ সচেতন দল হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে, আমরা ক্ষতিকারক প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমাবদ্ধ, বনায়ন, খাল খনন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প এবং সক্রিয় প্রচার সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প চালু করেছিলেন। যা পরবর্তীতে পরিবেশ বিভাগে হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। এই উত্তরাধিকার অব্যাহত রেখে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন প্রবর্তন করেছিলেন এবং পরিবেশগত সুরক্ষার জন্য আইনী ব্যবস্থার অগ্রগামী দেশের প্রথম পরিবেশ আদালত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সর্বদা সবুজ, পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ তৈরি করা।’

আজকের জলবায়ু সংকট এবং ক্রমবর্ধমান শিল্প দূষণের আলোকে, একটি বাস্তববাদী এবং প্রত্যাশিত জাতীয় কৌশল আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপি আবারও রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেলে বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষার জন্য যে পদক্ষেপ গ্রহণে প্রতিশ্রুতি দেবে তা উল্লেখ করেছেন তারেক রহমান। তা হলো-

১. পুনর্বিবেচনা (পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন গাছ রোপণ), সবুজ শক্তি এবং টেকসই কৃষিক্ষেত্রে একটি জাতীয় সবুজ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। ২. শিল্প ও পরিবার জুড়ে বায়োডেগ্রেডেবল বিকল্প প্রচার করার সময় ক্ষতিকারক প্লাস্টিক এবং বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো নিষিদ্ধ করা ৩. জলজ বাস্তুসংস্থান এবং সুরক্ষার জন্য নদী এবং খালগুলোর জন্য একটি বিস্তৃত ড্রেজিং এবং পুনরুদ্ধার প্রোগ্রাম চালু ৪. দেশের দুর্বল দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চলে জলবায়ু স্থিতিস্থাপক কৃষি এবং অবকাঠামোকে তরান্বিত করা ৫.পরিবেশ সচেতন নাগরিকদের একটি প্রজন্ম গড়ে তুলতে পরিবেশগত শিক্ষাকে স্কুল পাঠ্যক্রমের সাথে একীভূত করা।

তারেক রহমান বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণ বিলাসিতা নয়; এটি একটি প্রয়োজনীয়তা। আসুন আমরা একটি টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে রাজনৈতিক ও সামাজিক সীমানা জুড়ে একত্রিত হই, যেখানে ভবিষ্যতের প্রজন্ম সবুজ, জীবিত এবং স্থিতিস্থাপক একটি জমির উত্তরাধিকারী। এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আসুন আমরা আশার বীজ রোপণ করি, আমাদের বায়ু, জল এবং মাটি রক্ষা করি এবং সকলের জন্য ভবিষ্যত রক্ষা করি।’

আজ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সচেতনতা এবং পদক্ষেপ গ্রহণকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও এবার দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়’ এবং স্লোাগান হচ্ছে- ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো- পরিবেশ দূষণের কারণ চিহ্নিত করা, নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বারোপ, প্রতিরোধের উপায় নিরূপণ করাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সক্রিয়তা বাড়াতে কাজ করা।

জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে ১৯৭৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ বিশ্ব পরিবেশ দিবস (ডব্লিউইডি) পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের ১৪৩ টিরও বেশি দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশেও সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা সংগঠন দিবসটিকে কেন্দ্র করে র‌্যালি, বৃক্ষরোপণ, আলোচনা সভা ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম অব্যাহত রেখে চলেছে।