শিরোনাম
ঢাকা, ৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসত্য ও ভিত্তিহীন, অডিও ও ভিডিও অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে কাউন্টার ন্যারেটিভ প্রস্তুত করে জনগণকে অবহিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়া, স্বার্থান্বেষী মহল যাতে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি ও অপপ্রচারের মাধ্যমে গুজব ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্কতা ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ৯ম সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ এক সরকারি তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়, নিষিদ্ধ সংগঠন বা দল এবং স্বার্থান্বেষী মহল দেশে যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে-সে বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
এছাড়া, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং যানজট নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিভিন্ন বাহিনীর হারানো অস্ত্র উদ্ধার, মাদকবিরোধী প্রচার ও অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের এ সভায় সকল গার্মেন্টস ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য ভাতাদি যথাসময়ে পরিশোধ এবং শিল্পাঞ্চলগুলোর শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তৎপর থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। গুজবের কারণে যেন শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সরকারি তথ্যবিবরণীতে আরও জানানো হয়, দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম আরো জোরদার ও অধিক সক্রিয় করতে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রশিক্ষিত ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য ছাড়া সাধারণ পুলিশ সদস্যদের হাতে কোনো ধরনের মরণাস্ত্র না দেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
র্যাবের কাঠামোগত, প্রশাসনিক ও কার্যকরী দিকসমূহ পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার বা পুনর্গঠন সংক্রান্ত সুপারিশ প্রদান করার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া, বহিঃগমনাগমন নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২৫ প্রণয়নে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে শহিদ পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ এবং আহতদের পরিবারগুলোর নিরাপত্তা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। এসময়ে শহীদ পরিবারের সদস্যদের দায়েরকৃত মামলাসমূহ দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করা হবে। শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর সাক্ষাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।