শিরোনাম
ঝিনাইদহ, ২৭ মে, ২০২৫ (বাসস): মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন- প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বাওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে।
আজ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবীদের অধিকার রক্ষার্থে সরকার কাজ করছে। ‘জল যার, জলা তার’- এই নীতি বাস্তবায়নে কাজ চলছে। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বাওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সব দপ্তরের সঙ্গে কথা বলবো।
উপদেষ্টা বলেন, বাওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ দুর্দশা দূর করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক ও সামাজিক সব পক্ষকে এ বিষয়ে সংহত হতে হবে। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে, এই নতুন সময়ে আমরা সবাই মিলে সমাজের সব বৈষম্য দূর করবো।
এর আগে, সকাল ১০টায় বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, জেলা ক্ষেত মজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা ও কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন।
সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
সভায় বক্তারা বলেন, একটি প্রবাদ আছে ‘জাল যার, জল তার’। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রকৃত মৎসজীবীদের বাদ বাওড় ও প্রাকৃতিক জলমহালগুলো প্রভাবশালীদের মধ্যে ইজারা দেয়ার জন্য বাওড়গুলোতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদন ধ্বংস হয়ে গেছে। বাওড়গুলোতে বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃত্রিম খাবার ও রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ফলে জলমহালগুলো তার প্রাকৃতিক রূপ হারিয়েছে। সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধান হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বলেন, শত-শত বছর ধরে হালদার মৎস্যজীবীরা বাওড়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার জলমহাল নীতি সংশোধন করে বাওড়গুলো বাণিজ্যিক স্বার্থে অমৎস্যজীবীদের মধ্যে ইজারা দেয়ায় প্রভাবশালী মহলের লোকজন ইজারা নিয়ে বাওড়ে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়।
ইজারাদাররা বাওড়ে মৎস্য আহরণ ও বাওড়পাড়ের বাসিন্দারের ওপর নানাভাবে হয়রানি করে আসছে বলে হালদার সম্প্রদায়ের প্রকৃত মৎসজীবীরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জীবিকা হারিয়ে আজ মৎস্যজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের সব বাওড়ের ইজারা বাতিল করতে হবে। তাহলে বাওড় বাঁচবে, পরিবেশ, প্রকৃতি ও বাওড়পাড়ের মৎস্যজীবীরা বাঁচবে।