বাসস
  ১৯ মে ২০২৫, ১৯:১৯

বাংলাদেশের সঙ্গে শিক্ষা সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান আলজেরীয় রাষ্ট্রদূতের 

সোমবার ঢাকার দূতাবাসে আলজেরিয়ার ‘জাতীয় ছাত্র দিবসে’র ৬৯তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা, ১৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অংশীদারিত্ব ও অ্যাকাডেমিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আলজেরিয়ার মধ্যে শিক্ষা সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত আবদেলৌহাব সাইদানি।

সোমবার ঢাকার দূতাবাসে আলজেরিয়ার ‘জাতীয় ছাত্র দিবসে’র ৬৯তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এই বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

আলজেরিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে স্মরণসভা শুরু হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আলজেরিয়ার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত সাহসী আলজেরিয়ান শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, যারা পড়াশোনা ফেলে ১৯৫৬ সালের ১৯ মে অতুলনীয় দেশপ্রেম ও সাহসিকতা প্রদর্শন করে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে যোগ দেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এই দিনটি আলজেরিয়ার স্বাধীনতার দীর্ঘ ও কঠিন সংগ্রামের একটি অবিস্মরণীয় দিন।

তিনি আন্দোলনের সময় জেনারেল ইউনিয়ন অব আলজেরিয়ান মুসলিম স্টুডেন্স (ইউজিইএমএ)-এর ভূমিকা স্মরণ করেন। যাদের ডাকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা ফেলে জাতীয় প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। শিক্ষার্থীরা তখন স্লোগান দিয়েছিল ‘ডিপ্লোমা মৃত্যুর পর কাজে আসে না’।

সাইদানি বলেন, ছাত্র আন্দোলন নিছক কোনো প্রতিবাদ ছিল না, দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। এটি ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (এনএলএ)’কে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করেছে এবং স্বাধীনতার দাবিতে সকল স্তরের আলজেরিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ করেছে।

তিনি বলেন, আজ আমরা সেই প্রজন্মের ছাত্রদের সম্মান জানাই, যারা অঙ্গীকার করেছিল, প্রকৃত দেশপ্রেম সুযোগ-সুবিধার মধ্যে নয়, বরং উদ্দেশ্যের মধ্যে নিহিত।

স্বাধীনতার পর থেকে আলজেরিয়ায় যে অগ্রগতি হয়েছে, তার মধ্যে সাইদানি সাক্ষরতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও উচ্চশিক্ষা খাতের সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি শিক্ষাকে আলজেরিয়ার জাতীয় উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশি ও আলজেরিয়ান শিক্ষার্থীদের তিনি ১৯৫৬ সালে আলজেরিয়ান শিক্ষার্থীদের ত্যাগ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে এবং শিক্ষা ও জাতি গঠনে সর্বান্তকরণে নিজেদের উৎসর্গ করার আহ্বান জানান।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সাইদানি বলেন, এই আন্দোলন থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করলে আপনি উভয় দেশের উন্নয়নে আরও অবদান রাখতে এবং আলজেরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করতে উৎসাহিত হবেন। 

আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অংশীদারিত্ব, ছাত্র বিনিময় ও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভ্রাতৃপ্রতিম এ দুই দেশ ইসলামি উম্মাহর স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হবে।

তিনি একটি উজ্জ্বল, শক্তিশালী এবং আরও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যত গড়ে তোলার মাধ্যমে সর্বদা অতীতের ত্যাগকে সম্মান করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, বাংলাদেশি ও আলজেরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন, যারা শিক্ষা, উন্নয়ন এবং সংহতির প্রতি উভয় দেশের অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।