বাসস
  ১৪ মে ২০২৫, ১৬:৩৭
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ১৬:৪১

‘জাতীয় নারীস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ কমিশনের

গত ৫ মে সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন পেশ করেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিশু-কিশোর ও নারীদের সম্মানজনক পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। 

একইসঙ্গে নারীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় নারীস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। 

গত সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন পেশ করেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। প্রতিবেদনে নানা প্রস্তাব ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এরমধ্যে স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যমেয়াদি ৩২টি মুখ্য সুপারিশ রয়েছে। সেখানে এ বিষয়টি উঠে আসে।

সুপারিশে বলা হয়েছে- জলবায়ু ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিশু, কিশোর-কিশোরী, মহিলা ও গর্ভবতীদের জন্য সম্মানজনক পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে দুর্যোগ-নিরোধক ও নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী ও বয়স্ক বান্ধব হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া আরও বলা হয়েছে, নারীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় নারীস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান বিশেষায়িত সেবা প্রদান, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালের জন্য রেফারেল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নারী স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এটি নারীর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত উপেক্ষিত ও জটিল সমস্যার সমাধানে নেতৃত্ব দেবে এবং নারীস্বাস্থ্যকে জাতীয় অগ্রাধিকারের পর্যায়ে উন্নীত করবে। মা, শিশু, কৈশোরকালীন ও বিশেষ প্রয়োজনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী ও সম্মানভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এইসব জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনভিত্তিক ও সংবেদনশীল সেবা প্রদান ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত না হন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত হয়। তদপুরি নারীস্বাস্থ্যে সরকারি ও ব্যক্তিগত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউটগুলোকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সরকারি সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও বৃদ্ধদের মানসিক সুস্থতা, রোগ, মানসিক ও শারীরিক গড়ন, বুদ্ধিবৃত্তি, চিন্তা-চেতনা, সামাজিকতা ইত্যাদি বিষয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার শক্তিশালীকরণ ও উন্নয়নের জন্য বিদেশে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের বাইরে কর্মরত সকল চিকিৎসক, নার্স, প্রযুক্তিবিদ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার শক্তিশালীকরণ ও উন্নয়নের জন্য তাদের মূল্যবান দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে আসার জন্য আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে, যা প্রত্যাবর্তনকারী পেশাজীবীদের প্রয়োজনীয় সুবিধা ও সহায়তা প্রদান করবে।

সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বরে ১২ সদস্যের স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন করে। কমিশনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান।

কমিশনের সদস্য হিসেবে আরও আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) জনস্বাস্থ্য ও হেলথ ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মুহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার, শিশু নিউরো বিজ্ঞান বিভাগের নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নাইলা জামান খান, সাবেক সচিব এম এম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক, আইসিডিডিআরবি’র ডা. আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার হাসপাতালের স্কয়ার ক্যান্সার সেন্টারের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, গ্রিন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআরবি’র বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ আহসানুর রহমান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ওমায়ের আফিফ।