শিরোনাম
ঢাকা, ১১ মে, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীনা আধুনিকীকরণ বাংলাদেশের জন্য কিছু অনুকরণীয় নজির হতে পারে। কারণ বাংলাদেশ ‘রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে’ দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, ‘আধুনিকীকরণ বৈশ্বিক দক্ষিণের জন্য সাধারণ কর্মকাণ্ড। পশ্চিমা দেশগুলো কয়েক শতাব্দী ধরে যা অর্জন করেছে গত কয়েক দশকে চীন তা অর্জন করেছে।’
আজ রোববার নগরীর একটি হোটেলে ‘শি জিনপিং: চীনের শাসন ব্যবস্থা বিষয়ক চীন-বাংলাদেশ পাঠক ফোরাম’- আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীনের চর্চা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব আধুনিকীকরণের পথ অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন দুটি বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে- দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং টেকসই সামাজিক স্থিতিশীলতা, যা এই মিথকে ভেঙে দিয়েছে যে, আধুনিকীকরণ মানে পশ্চিমীকরণ।
সম্প্রতি চীন সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
তিনি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, চায়না ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনস গ্রুপের (সিআইসিজি) সভাপতি ডু ঝানইউয়ান এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডেপুটি আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা উভয় দেশের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে, শি জিনপিং: চীনের শাসনব্যবস্থা (প্রথম খণ্ড) এর বাংলা সংস্করণ সম্পর্কে এই ফোরাম আয়োজন করেছেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, বাংলাদেশ-চীন বর্ষে জনগণের মধ্যে বিনিময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে এই অনুষ্ঠানটি রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনের প্রতিবেশী সংক্রান্ত কূটনীতির ভিত্তি হচ্ছে সৌহার্দ্য, আন্তরিকতা, পারস্পরিক কল্যাণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি।
"শি জিনপিং: চীনের শাসনব্যবস্থা" বইটিতে ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ রচনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত, এটি ৪২টি ভাষায় চারটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে, যা ১৮০টিরও বেশি দেশে পৌঁছেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, "আপনি সারা বিশ্বে প্রায় ১,৭০০টি প্রধান গ্রন্থাগারের বইয়ের সারিতে এটি পাবেন। তিনি বলেন, এই বইটি সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতৃত্ব বিষয়ক প্রকাশনা হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, "বিভিন্ন মহাদেশের সরকারি নেতা এবং নীতিনির্ধারকরা এটি অধ্যয়ন করেছে এবং তাদের সংগ্রহে রেখেছেন। কেউ যদি চীনের সাফল্য বুঝতে চান, তাহলে এই বইয়ের পৃষ্ঠায় উত্তর পেয়ে যাবেন।"
রাষ্ট্রদূত বলেন, এই বইটি বাংলাদেশি পাঠকদের জন্য সমসাময়িক চীন বোঝার জন্য একটি জানালা খুলে দেবে।
তিনি বলেন, "অনেক বাংলাদেশি বন্ধু আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কীভাবে চীন প্রায় ১০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে পেরেছে। আমি তাদেরকে বলেছি যে, আপনি এই বইটিতে উত্তরগুলি খুঁজে পাবেন।"
রাষ্ট্রদূত বলেন, মহান তাত্ত্বিক দিকনির্দেশনা ছাড়া চীনের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক রূপান্তর সম্ভব হত না।
রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাধ্যমে, বাংলাদেশি বন্ধুরা চীনের উন্নয়ন পথ, শাসন দর্শন এবং নির্দেশিকা নীতি সম্পর্কে আরও গভীর অন্তর্দৃষ্টি লাভ করবেন।
তিনি বলেন, "এই বইটি বাংলাদেশকে আধুনিকীকরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দরকারি রেফারেন্স হিসেবে বিবেচিত হবে।"
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, "এটি আমাদের পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার এবং শেখার জন্য একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম।"