বাসস
  ১১ মে ২০২৫, ০০:১১

সিলেটে কোরবানিযোগ্য পশু তিন লাখ ৯ হাজার

ছবি : সংগৃহীত

সিলেট, ১০ মে, ২০২৫ (বাসস) : আসন্ন ঈদ-উল-আযহায় সিলেটে কোরবানিযোগ্য তিন লাখের বেশি। পাশাপাশি হাটে বিক্রি স্থানীয় গৃহপালিত পশু এবং অন্যান্য জেলা থেকে পাইকারদের আনা বড় আকারের গরু ও ছাগল। সবমিলিয়ে এবার সিলেট অঞ্চলে সাড়ে তিন লাখের বেশি পশু কোরবানি হতে পারে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক ডা. মারুফ হাসান বাসস’কে জানিয়েছেন, প্রতি বছর সিলেট অঞ্চলে প্রায় চার লাখ গরু কোরবানি হয়। এবার চাহিদা কিছু কম হতে পারে। প্রাথমিক হিসাবে এই বছর সিলেট বিভাগে কোরবানির পশুর চাহিদা আছে ২ লাখ ৭১ হাজার পাঁচশ। খামারিদের কাছে মজুত আছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৫১৫টি।

চাহিদা অনুযায়ী এবার সিলেটে কোরবানির পশুর সংকট দেখছেন না তিনি। বলেন, সিলেটে খামারিদের কাছে পর্যাপ্ত পশু আছে। এর পাশাপাশি অনেকেই কোরবানির সময় গৃহপালিত পশু বিক্রি করেন। কোরবানির হাটে প্রতিবছর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার গরু এনে বিক্রি করেন পাইকাররা। সবমিলিয়ে এবার চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি গরু, ছাগল, ভেড়া হাটে পাওয়া যাবে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তর বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের চার জেলার বিভিন্ন খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত তিন লাখ ৯ হাজার গবাদি পশু। এর মধ্যে এক লাখ ৩০ হাজার ৭৫৬টি ষাঁড়, ৩২ হাজার ৩৬৮টি বলদ, ৩৭ হাজার ৩৯২টি গাভি, ৫ হাজার ৪২০টি মহিষ, ৭৭ হাজার ৬৪৬টি ছাগল, ২৪ হাজার ১৪টি ভেড়া ও ৯১৯ টি অন্যান্য পশু রয়েছে।

এই বছর সিলেট জেলায় কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা আছে ৮৩ হাজার ৫৪১টির। প্রস্তুত আছে ১ লাখ ২ হাজার ২৭৮টি। তন্মধ্যে ৪৩ হাজার ৮৮২টি ষাঁড়, ১৫ হাজার ২৭৭টি বলদ, ৮ হাজার ১৮৪টি গাভি, ৩ হাজার ৪০২টি মহিষ, ২৪ হাজার ৪৪৯টি ছাগল, ৭ হাজার ১৫টি ভেড়া ও ৫৯টি অন্যান্য পশু রয়েছে। সিলেট জেলায় গত বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০৯টি। প্রস্তত ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার ৯২১টি।

মৌলভীবাজার জেলায় এবার কোরবানি যোগ্য পশুর চাহিদা আছে ৭৮ হাজার ৯২৯টি এবং প্রস্তুত আছে ৮০ হাজার ৬৩৭টি। তন্মধ্যে ৩২ হাজার ৮৮টি ষাঁড়, ৭ হাজার ৫৯১টি বলদ, ৬ গাজার ৯০১টি গাভি, ১ হাজার ২৭২টি মহিষ, ২৮ হাজার ৬২২টি ছাগল, ৪ হাজার ১৬৩টি ভেড়া রয়েছে। মৌলভীবাজার জেলায় গত বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ৯৮ হাজার ৫৪২টির এবং প্রস্তুত ছিল ৮৩ হাজার ৮১টি পশু।

হবিগঞ্জ জেলায় এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা ৬৫ হাজার ৫৮৩টি এবং প্রস্তুত আছে ৭০ হাজার ৭৪৬টি। তন্মধ্যে ২৯ হাজার ৯৬৬টি ষাঁড়, ৫ হাজার ৪৯টি বলদ, ১৪ হাজার ২৯১টি গাভি, ৩৫৯টি মহিষ, ১৩ হাজার ২০২টি ছাগল ও ৭ হাজার ৭৭৯টি ভেড়া রয়েছে। হবিগঞ্জ জেলায় গত বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ৯০ হাজার ৬৩৮টি এবং প্রস্তুত ছিল ১ লাখ ২ হাজার ৯৭৬টি।

সুনামগঞ্জ জেলায় এবার কোরবানি পশুর চাহিদা ৪৩ হাজার ৪২৪টি এবং প্রস্তুত আছে ৫৪ হাজার ৮৫৪টি। তন্মধ্যে ২৪ হাজার ৮২০টি ষাঁড়, ৪ হাজার ৩৫১টি বলদ, ৮ হাজার ১৬টি গাভি, ৩৮৭টি মহিষ, ১১ হাজার ৩৬৩টি ছাগল, ৫ হাজার ৫৭টি ভেড়া ও ৮৬০টি অন্যান্য পশু রয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলায় গত বছর চাহিদা ছিল ৫৪ হাজার ৩৬২টি এবং প্রস্তুত ছিল ৬২ হাজার ৬৮৮টি।

গত বছরের ন্যায় এবারও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পশু দিয়ে চাহিদা মিটানো সম্ভব। প্রতিটি খামারে ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের কোরবানির পশু রয়েছে।

খামারিকে গবাদি পশু হৃষ্টপুষ্টকরণের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্টেরয়েডের ব্যবহার রোধে উপজেলা পর্যায়ে উঠান-বৈঠক করে খামারিকে হাতে কলমে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কুরবানির জন্য মসজিদের ইমাম, খসাইদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের পরিচালক ডা. মারুফ হাসান বলেন, এবার সিলেট বিভাগে কোরবানিযোগ্য পশুর ঘাটতি নেই। প্রতিবছর দেশের অন্যান্য জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা বিক্রির জন্য গরু-ছাগল নিয়ে সিলেটে আসেন। ঈদ ঘনিয়ে এলে সিলেটে কুরবানির পশুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি। 
বিগত বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, সিলেটের অনেক প্রবাসী বড় গরু কুরবানি দিনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সিলেটে স্থানীয়ভাবে এই ধরনের গরু খুব কম উৎপাদন হয়। তাই, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বড় আকারের গরু সিলেটে আসে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।