শিরোনাম
ঢাকা, ১০ মে, ২০২৫ (বাসস) : স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জন্য যুগোপযোগী বেতন কাঠামো প্রণয়ন করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন।
স্বাস্থ্য সবার অধিকার উল্লেখ করে স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশন গত সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জন্য বেতন বোর্ড (স্বল্প-মেয়াদী) বিষয়ে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশনের অধীনে ইন্টার্ন চিকিৎসক, স্নাতকোত্তর ছাত্র-ছাত্রী (ভাতা), বেসরকারি চিকিৎসক, নার্স, ও সব ধরনের স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য একটি সুসংগঠিত এবং যুগোপযোগী বেতন কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে।’
সুপারিশে আরো বলা হয়, ‘এই কাঠামো প্রণয়ন করলে কর্মীদের আর্থিক স্থায়িত্ব এবং চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। মধ্য-মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এটি স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী উৎসাহ এবং কাজের পরিবেশের উন্নতি করতে সহায়তা করবে।’
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই-আগস্ট ২০২৪- এ শহীদ বীরদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত এ সংস্কার প্রতিবেদন। একটি বৈষম্যহীন ন্যায্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় তাদের স্বপ্নের সহায়ক হোক এই স্বাস্থ্যখাত সংস্কার প্রস্তাবনা।’
প্রস্তাবনার মুখবন্ধে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলোতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী, সহজলভ্য ও সর্বজনীন করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে ‘স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন’ নামে কমিশন গঠন করে গত ১৮ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। জাতীয় অধ্যাপক ও ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ডা. এ কে আজাদ খানকে কমিশনের প্রধান করা হয়। ড. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন (সভাপতি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট), প্রফেসর লিয়াকত আলী (চেয়ারম্যান, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন), প্রফেসর ডা. সায়েবা আক্তার (গাইনোকলজিস্ট),প্রফেসর ডা. নায়লা জামান খান (শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিভাগ), এম এম রেজা (সাবেক সচিব),প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক (সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা,দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা), ডা. আজহারুল ইসলাম (কনসালটেন্ট আইসিডিডিআর’বি), প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন (স্কয়ার ক্যান্সার সেন্টার, স্কয়ার হাসপাতাল), প্রফেসর ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, (চিফ কনসালটেন্ট, গ্রীন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার এন্ড রিসার্চ), ডা. আহমদ এহসানুর রাহমান (বিজ্ঞানী, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য বিভাগ, আইসিডিডিআর’বি), উমাইর আফিফ (৫ম বর্ষ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ) কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এই কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করেন।
কমিশন সুপারিশ প্রণয়নে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেছে তা হলো- সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাবিত মেয়াদ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে করণীয়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের মেয়াদে করণীয়, জাতীয় প্রত্যাশা ও অঙ্গীকার।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন ও সুপারিশ প্রণয়নে কমিশন সদস্যদের নিয়মিত বৈঠক হয়েছে মোট ৫১ টি, পরামর্শ সভার আয়োজন করেছে মোট ৩২টি, পরামর্শ সভা হয়েছে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, মুন্সীগঞ্জে ও ঢাকায়। বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ ও সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়েছে।