শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৯ মে ২০২৫ (বাসস) : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশি কিংবা বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে আগে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। সেটা তখনই সম্ভব, যখন প্রকৃত অর্থে জনগণের ভোটে একটি নির্বাচিত সরকার থাকবে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ হতে হলে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত, স্থিতিশীল সরকার থাকতে হবে। তখনই বিনিয়োগকারীরা সরকারের মানসিকতা, দায়বদ্ধতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেখে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।
চাকরির সুযোগ বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে-বাংলাদেশের জন্য এক নম্বর অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার কী, আমি বলব বিনিয়োগ। দুই নম্বরও বিনিয়োগ, তিন নম্বরও বিনিয়োগ। বিনিয়োগ ছাড়া আত্মকর্মসংস্থান বা শিল্পায়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি শুরু হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে, যিনি মুক্তবাজার অর্থনীতির ভিত্তি রেখেছিলেন। আমরা সেই ধারাবাহিকতায় ‘সবার জন্য অর্থনীতি’র কথা বলি, গণতন্ত্রায়ণের কথা বলি। এগুলো ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্মাণ সম্ভব নয়।
সেমিনারে আমীর খসরু বলেন, আমরা দেশে বিনিয়োগ চাই। আগামী দিনে আমাদের দল সরকারে এলে এটাই হবে আমাদের বিনিয়োগ নীতিমালা। আমরা লিখে দিয়েছি, জনগণকে জানিয়ে দিয়েছি। আমরা প্রমিজ করেছি-আঠারো মাসে এক কোটি চাকরির ব্যবস্থা করব। আর সেটি হবে একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে দেশের জনগণের মনোজগতে বিশাল পরিবর্তন যেটা এসেছে, সেটা যারা অনুধাবন করতে পারবে না, ধারণ করতে পারবে না তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই। সে দলেরও নেই, রাজনীতিবিদেরও নেই। আমি মনে করি, সেটা আমরা (বিএনপি) ধারণ করতে পেরেছি।’
কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন এবং তারুণ্যের ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকের বিষয়ে দুটি কথা বলবো। চাকরি পেতে হলে, প্রথমত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ। বিনিয়োগ না হলে সেটা আত্মকর্মসংস্থান হোক সেটা চাকরির জন্য হোক, কোনো দিনও সফল হতে পারবো না।’
তিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থার জন্যই বিএনপির পক্ষ থেকে ৩১ দফা দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কারও মাথায় না ঢোকে, তাহলে কিছু করার নেই।
সেমিনারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেন, আমরা একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে প্রবেশ করেছি। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি সরকার গঠনের সম্ভাবনা বিএনপির। এই দলের নেতা তারেক রহমানের ভিশন আমরা জেনেছি। সাম্প্রতিক সময়ে তার বক্তব্যও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা আশা করি, সামনের দিনে একটি ভালো পরিবেশ তৈরি হবে এবং দক্ষ তরুণ সমাজ গড়ে উঠবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউছুপ, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, স্টেট ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক আকতার হোসেন খান, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, ইউনিভার্সিটি অব ডালাস টেক্সাসের শিক্ষক শাফকাত রাব্বি, ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটির ফাউন্ডার সাঈদ আল নোমান, কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইয়েদ আবদুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্রের ওরাকলের সি. ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মুনতাসীর মুনির, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাহরিন আই খান, চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ, যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন।