শিরোনাম
সিলেট, ৬ মে ২০২৫ (বাসস) : সিলেটের মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের পৃথক দুটি মামলার বিচার সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মামলার নথিপত্র দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছার পর প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আদালত আগামী ১৩ মে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন।
দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) আবুল হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য মামলার সাক্ষ্য নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এই জন্য আগামী ১৩ মে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেছেন।
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলার নথিপত্র রোববার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা গ্রহণ করেন। এর আগে গত ১৭ মার্চ সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা বদলি করতে হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। ফলে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং চাঁদা দাবি ও ছিনতাইয়ের মামলা দুটির বিচার চলবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে দক্ষিণ সুরমার এক যুবক তার নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরতে যান। সন্ধ্যার পর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান করছিলেন তারা। এই সময় কয়েক জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী দম্পতিকে ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে তাদের জিম্মি করে গাড়িতে তুলে কলেজের ছাত্রাবাসের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বামীর কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তারা।
ওই ঘটনায় গত বছরের জানুয়ারিতে ধর্ষণ মামলার ও চলতি বছরের মে মাসে চাঁদাবাজির মামলার অভিযোগ গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুই হয়নি।
২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার তাহিদ মিয়ার ছেলে সাইফুর রহমান (২৮), হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উমেদনগরের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), জকিগঞ্জের আটগ্রামের মৃত অমলেন্দু লস্কর ওরফে কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৬), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুরের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৫), কানাইঘাট উপজেলার লামা দলইকান্দির (গাছবাড়ী) সালিক আহমদের ছেলে মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫) অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশ। আসামি রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে ধর্ষণে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। এতে ৫২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়।