শিরোনাম
বাগেরহাট, ৫ মে ২০২৫ (বাসস) : জেলার মোংলায় আজ সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে মহাবিপন্ন বাটাগুর বাসকা প্রজাতির তিনটি কচ্ছপের ডিম থেকে মোট ৬৫ টি বাচ্চা জন্ম নিয়েছে।
আজ সোমবার সকালে বাচ্চাগুলোকে তুলে কেন্দ্রের কচ্ছপ লালন-পালন কেন্দ্রর সংরক্ষণ প্যানে রাখা হয়েছে। প্যানে লালন-পালনের পর কচ্ছপের বাচ্চাগুলোকে বড় পুকুরে ছাড়া হবে।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, নতুন করে আবারও প্রকৃতিতে ওই প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়ার পর প্রজননের জন্য গাজীপুরে ভাওয়াল গড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সেগুলোকে নিবিড়ভাবে লালন-পালন ও প্রজননের চেষ্টা করেন। সেখানে ভালো সাড়া না পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল আটটি বাটাগুর বাসকা, তাদের জন্ম দেয়া ৯৪টি বাচ্চাসহ করমজল প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। করমজলে বাটাগুর বাসকার গবেষণায় বাংলাদেশ বন বিভাগের সঙ্গে আরও তিনটি সংস্থা যোগ দেয়। এগুলো হলো প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, অস্ট্রিয়ার জু ভিয়েনার গবেষণা দল এবং যুক্তরাষ্ট্রের টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স।
২০১৭ সাল থেকে কেন্দ্রটিতে ডিম দিতে শুরু করে মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপগুলো। বর্তমানে সুন্দরবনের করমজল কেন্দ্রটিতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৩৮৭টি কচ্ছপ রয়েছে।
করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, চলতি ২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনটি কচ্ছপ মোট ৮২ টি ডিম দেয়। পরে সেগুলো সংগ্রহ করে বালুর মধ্যে রাখা হয়। নিবিড় পরিচর্যার পর সোমবার সকালে কেন্দ্রের পুকুরপাড়ের স্যান্ড বিচে রাখা বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের ডিম থেকে ফুটে বের হয় ৬৫'টি বাচ্চা। এসব বাচ্চাদের প্যানে রেখে লালন-পালনের পর বড় পুকুরে ছাড়া হবে। এ পর্যন্ত সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ৫২১টি ডিম থেকে ৪৭৫টি বাচ্চা ফুটাতে তারা সক্ষম হয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
হাওলাদার আজাদ কবির আরও জানান, পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির কচ্ছপ আছে। একসময় এ অঞ্চলে ২৬টি প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যেত। এর মধ্যে বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপ আর দেখা যাচ্ছিল না। এ কারণে ২০০০ সাল থেকে গবেষকরা ধারণা করছিলেন, পৃথিবীতে আর বাটাগুর বাসকার কোনো অস্তিত্ব নেই। বিষয়টি নিশ্চিত হতে ২০০৮ সালে গবেষকেরা প্রকৃতিতে বাটাগুর বাসকা আছে কি না, তা খুঁজতে শুরু করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে মোট আটটি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ছিল চারটি পুরুষ ও চারটি স্ত্রী বাটাগুর বাসকার প্রজাতির কচ্ছপ।